পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
৬১

 ১৯৪৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যভাগে আজাদ হিন্দ ফৌজের অগ্রবর্ত্তী ইউনিটগুলি, ইম্পিয়াল নিপ্পনবাহিনী সহ ভারত-ব্রহ্ম সীমান্ত অতিক্রম করিয়াছে। সুতরাং এক্ষণে ভারতের মুক্তির জন্য ভারতের মাটিতেই যুদ্ধ আরম্ভ হইয়াছে।

 নির্দেশনামায় আরও বলা হয় যে বৃটিশ কর্ত্তৃপক্ষ এক শতাব্দীর অধিক কাল নির্মমভাবে ভারতকে শোষণ করিতেছেন; এবং তাঁহাদের জন্য যুদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে বিদেশী সৈন্য আমদানী করিয়াছেন। এই প্রকারে তাঁহারা আমাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সৈন্যদল নিযুক্ত করিয়াছেন ভারত-ব্রহ্ম সীমান্ত অতিক্রম করিয়া আমাদের সৈন্যদল আমাদের দাবী যৌক্তিকতার প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হইয়া সংখ্যাধিক, অধিকতর সুসজ্জিত অথচ বিভিন্ন জাতীয় ও বিচ্ছিন্ন শত্রুসৈন্যের সম্মুখীন হইয়াছে এবং প্রত্যেক যুদ্ধে তাহাদিগকে পরাজিত করিয়াছে।

 অতঃপর এই নির্দেশনামায় বলা হয়, আমাদের অধিকতর সুশিক্ষিত এবং শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈন্যদল স্বাধীনতালাভের জন্য মৃত্যুপণ করিয়া, অবিচল সঙ্কল লইয়া শীঘ্রই শত্রুপক্ষের চেয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদন করে। প্রত্যেকবার পরাজিত হইবার পর শত্রুপক্ষের মনোবল ক্ষুণ্ণ হইতে পারে। অত্যন্ত কঠোর অবস্থার মধ্যেও যুদ্ধ করিয়া আমাদের অফিসার ও সৈন্যগণ এরূপ সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দিয়াছেন যে তাঁহাদের সকলেরই প্রশংসালাভ করিতে সক্ষম হইয়াছে। রক্ত ও আত্মদান করিয়া এই সমস্ত বীর যে ঐতিহ্যের সৃষ্টি করিয়াছেন ভারতবর্ষের ভাবী সৈনিকগণকে তাহা রক্ষা করিয়া চলিতে হইবে। যখন ইম্ফল আক্রমণের সমস্ত উদ্যোগ আয়োজন সম্পূর্ণ হইয়াছিল তখন প্রবল বৃষ্টি আরম্ভ হয় এবং রন কৌশলের দিক হইতে ইম্ফল আক্রমণ অসম্ভব হইয়া পড়ে। প্রাকৃতিক বাধা বিপত্তির ফলে আমাদিগকে আক্রমণ স্থগিত রাখিতে হয়। আক্রমণ স্থগিত রাখার পর দেখা যায় যে, আমাদের সৈন্যগণ ঐ সময়ে যে স্থান দখল করিয়াছিল সেইসমস্ত স্থান দখল করিয়া রাখা তাহাদের পক্ষে অসুবিধাজনক হইয়া পড়িয়াছে। আত্মরক্ষার পক্ষে অধিকতর অনুকূল স্থানলাভের জন্য আমাদের সৈন্যগণকে