পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ

বিহারীকে গ্রেপ্তারের জন্য বারো হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয় এবং হিন্দুস্থানের সর্ব্বত্র তাঁহার ছবি প্রচার করা হয়। এত চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি পুলিস ও গোয়েন্দাদের চক্ষে ধূলি দিয়া বাংলার ও পাঞ্জারের মধ্যে বিপ্লবসূত্র গ্রথিত করিবার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন।

 ১৯১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বিষ্ণুগণেশ পিংলে নামক জনৈক মারাঠা যুবক অনেকদিন আমেরিকায় বাস করিয়া স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তন করিলেন। তিনি আমেরিকায় ‘গদর’ ও অন্যান্য বিপ্লব-প্রতিষ্ঠানের সহিত বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতে বিপ্লব জাগরণে সহায়তা করিবার নিমিত্তই আসিয়াছিলেন এবং বাঙ্গালী বিপ্লবীদের সহিত মিলিত হন। রাসবিহারীর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বিপ্লব-ভাবাপন্ন লোকদের একত্র করিয়া দেশকে কি প্রকারে স্বাধীন করা যায় সে সম্বন্ধে নানা পরামর্শ করিলেন। রাসবিহারীর অত্যদ্ভূত সংগঠন শক্তি ছিল। তিনি পিংলে, মোহন সিং, কর্তার সিং, শচীন্দ্রনাথ প্রভৃতি বিপ্লবীগণের সাহায্যে দেশীয় সৈনিকদের মধ্যে বিদ্রোহ সৃষ্টি করিবার আয়োজন করিলেন, কয়েকটি স্থানের সৈনিকেরা রাজী হইল। স্থির হইল ১৯১৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী বিদ্রোহ হইবে। কিন্তু ইতিমধ্যে কৃপাল সিং নামক একজন বিশ্বাসঘাতক পুলিসের নিকট সমস্ত বলিয়া দেয়। সরকার তখনই ব্রিটিশ সৈন্য আনাইয়া বারুদঘরে ও তোপখানায় বিশেষ পাহারার ব্যবস্থা করিয়া সতর্ক হইলেন। সরকারের ভাবগতিক ও আয়োজন দেখিয়া সৈনিকেরা ভয় পাইল।

 চারি দিকে খানাতল্লাস ধরপাকড় চলিল। রাসবিহারীর এক বাসায় অনেক রিভলবার, গুলী, বোমা প্রভৃতি আবিষ্কৃত হইল, কিন্তু সে-বারও পুলিস রাসবিহারীকে ধরিতে পারিল না। কয়েকদিন পরে মিরাটের এক কেল্লার মধ্যে পিংলে কতকগুলি বোমা সমেত ধরা পড়েন। সরকারী মতে বোমাগুলি এমন উপাদানে গঠিত যে, সেগুলি অনায়াসে অর্ধেক রেজিমেণ্ট উড়াইয়া দিতে পারিত। বিচারে পিংলের ফাঁসী হইল। ইহার পর ব্যাপক ভাবে খানাতল্লাস করিয়া