পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আজাদ হিন্দ ফৌজ

সবই বোঝে। আজাদ হিন্দ ফৌজে তাহাদের স্বেচ্ছায় যোগদান করা কর্ত্তব্য। সাক্ষীকে বলা হয় যে সুপ্রীম হেডকোয়ার্টারে মোহন সিংএর নিকট সাক্ষীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা হইয়াছে। ‘যখন আপনি কুয়ালালামপুরে এবং সিঙ্গাপুরে ছিলেন তখন আপনি মুসলমানদের আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করিতে নিষেধ করিয়াছেন।’ এইজন্যই সাক্ষীকে আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদানের জন্য উপদেশ দেওয়া হইতেছে। অন্যথা তাহার প্রাণহানির আশঙ্কা আছে। সাক্ষী উত্তরে বলে যে, উহাতে সে ভীত নয়। তখন তাহাকে বলা হয় যে, ফৌজে যোগদানে অস্বীকৃতির পরিণাম কি, তাহা সে কাল বুঝিতে পারিবে।

 পরদিন বন্দীশিবিরের প্রায় দুইশত কি আড়াই শত বন্দীকে সারিতে দাঁড় করান হইল। উহার পর তিনজন সৈন্য আসিয়া সাক্ষী ও অন্য সকলকে ডাবল মার্চ্চ করিতে নির্দ্দেশ দিল। ডাবল মার্চ্চ করিতে আরম্ভ করার সঙ্গে সঙ্গেই সৈন্যেরা লাঠি দিয়া প্রহার করিতে থাকে। মার্চ্চের পরিসমাপ্তিতে সৈন্যেরা তাহাদের থলি, বাঁশ ও টিন দিয়া থলিতে গোবর ভরিতে নির্দ্দেশ দিল। তারপর তাহাদের তিনশত গজ ‘ডাবল মার্চ্চ’ করিয়া বন্দীশিবিরের মধ্যে গিয়া গোবর ঢালিতে হয়। তাহাদের সঙ্গী সিপাহীরা ক্লান্ত হইয়া মাঝে মাঝে দাঁড়াইতে লাগিল, আর বন্দীরা তাহাদের পাশ দিয়া যাওয়ার সময়ে মারিতে লাগিল। কোনও বন্দী প্রহার এড়াইবার জন্য সিপাহীদের তাড়াতাড়ি পাশ কাটাইবার চেষ্টা করিলে, তাহাকে হাত নীচের দিকে নামাইতে নির্দ্দেশ দিয়া প্রহার করা হইতে থাকে।

 গোবর সম্পূর্ণরূপে অপসারিত হওয়ার পর একজন সেনানী সিপাহীদের প্রহার বন্ধ করিতে বলিয়া সাক্ষীদের গোবর, ছাই ও মাটি দিয়া মিশাইতে বলে। সাক্ষী বলে যে, নয়জন লোক ইহা করিতে থাকে। তাহাদের সকাল ৮টা হইতে সন্ধ্যা ৬টা পর্য্যন্ত কাজ করিতে হইত, মাঝখানে বিশ্রাম থাকিত