পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
৮১

এক ঘণ্টা। প্রত্যেক সন্ধ্যায় নাম ডাকা হইত। প্রথম সন্ধ্যাতেই সাক্ষীদের বলা হইল যে, যদি কেহ নিজেকে পীড়িত বলে এবং ডাক্তার পীড়া দেখিতে না পায়, তাহা হইলে ঐ বন্দীকে বার ঘা বেত মারা হইবে।

 অতঃপর সাক্ষী বলে, একদিন এই অপরাধে একজন বন্দীকে বেত মারা হইল। ছয় ঘা রেতের পর সে অচেতন হইয়া পড়িলে শাস্তি দান বন্ধ করা হয়।

 একদিন কাজ করার সময়ে একজনকে কাঁদিতে শোনা গেল। সাক্ষী অগ্রসর হইয়া দেখিল ‘প্রায় ষাট গজ দূরে একজন খাকী পোষাক পরিহিত হস্তপদবন্ধ বন্দীকে দুইজন সিপাহী প্রহার করিতেছে। লোকটা বেশী চিৎকার করিতে থাকিলে একজন অফিসার উচ্চৈস্বরে সিপাহীদের বলেন তোমরা ঠিকমত মারিতে জান না। অফিসার আসিয়া বন্দীর মুখ চাপিয়া ধরিতে বলিল, তারপর একজন সিপাহীর লাঠি নিয়া দুইবার মারিল। অফিসার উহার পর বলিল, এইভাবে মারিতে হয়।

 সন্ধ্যায় নাম ডাকার সময়ে প্রত্যহ তাহাদের আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদানের জন্য বিশেষভাবে চেষ্টা হইত। কিন্তু ছয় দিন শিবিরে থাকার পরও কোনও বন্দী ফৌজে যোগদানে রাজী হইল না।

 বন্দীশিবির তাহাদের পোকা ও কাঁকর মিশানো খুব সামান্য পরিমাণে ভাত খাইতে দেওয়া হইত। সঙ্গে থাকিত সামান্য লবণমিশ্রিত কিছু তরকারী সিদ্ধ। সাক্ষী কখনও আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগ দেয় নাই।

 শ্রীযুক্ত ভুলাভাই দেশাইএর জেরার উত্তরে সাক্ষী বলে যে, ১৩ই সেপ্টেম্বর তারিখে তাহাদিগকে বন্দীনিবাসে লইয়া যাওয়া হয়। এই বন্দীনিবাসটি একটি স্বতন্ত্র জায়গায় অবস্থিত ছিল। বুলার ক্যাম্প প্রায় আট মাইল দূরে ছিল। যেখানে তাহাদিগকে রাখা হইয়াছিল সেই স্থানটি দৈর্ঘ্যে প্রায় চারিশত গজ এবং প্রস্থেও প্রায় চারিশত গজ হইবে।