পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবার জন্য কত ফন্দী করতুমি এখন মনে হ’লে হাসি পায়। John Stuart Millva. Subjection of Women erg was its sy পুস্তক ছিল ; আর তাই পড়ে ‘স্ত্রী-স্বাধীনতা’ নামে এক Pamphlet বের করেছিলুম। বিলেত গিয়ে আমি দেখতুম স্ত্রী পুরুষ কেমন স্বাধীনভাবে সামাজিক ক্ষেত্রে মেলা মেশা করছে - গাৰ্হস্থ্য জীবনে তাদের মেয়েদের কি মোহন সুন্দর প্রভাব । কত বিবাহিতা অবিবাহিত রমণী সমাজের বিবিধ মঙ্গলব্রেতে জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনভাবে বিচরণ করেছেন। আমি একবার একটি সন্ত্রান্ত উচ্চ পরিবার মধ্যে অতিথিরূপে কতিপয় দিবস যাপন করেছিলুম। গৃহে অনেকগুলি কন্যা কুমারী ছিলেন-সমস্ত গৃহকার্য্যে তাহাদেরই আধিপত্য । বিদায় নেবার সময় তাহদের খাতায় স্মরণ-চিহ্ন স্বরূপ আমার হস্তাক্ষর রেখে যেতে অনুরোধ করাতে আমি লিখেছিলুম “স্ক্রিয়ঃ শ্রিয়শচ গেহেষু ন বিশেষোহস্তি কশ্চন।” তাদের তুলনায় আমাদের স্ত্রীরা পর্দার অন্ধকারে কি থাকবীকৃত বদ্ধ জীবন যাপন করেন,- উপযুক্ত ক্ষেত্রের অভাবে তাদের মন কি সঙ্কীর্ণ-তাদের স্বাভাবিক জ্ঞানবলক্রিয়া কিছুই ক্ষুক্তি পায় না। বিলেত থেকে ফিরে এসে এই বিষয়ে পূর্বপশ্চিমের পরস্পর বিপরীত ভােব আমাদের মনে স্পষ্ট প্রতিভাত হ’ল-পৰ্দা উচ্ছেদ-স্পৃহা আরও জেগে উঠল। কিন্তু তখন ভাল করে দেখতে পেলুম আমার সামনে যে পর্বত সমান বিক্সবাধা রয়েছে তা অতিক্রম করা কি কঠিন ! যে প্রচণ্ড গড়ের মধ্যে আমাদের মেয়েরা আবদ্ধ, সে দুর্গ ভেদ করা কি দুরূহ ব্যাপার! অথচ আমার তা না করলেই নয়। তখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করে ফিরে এসেছি—বোম্বাই আমার কর্ম্মস্থান নিয়ােজিত হয়েছে—বােম্বাই যেতেই হবে, আর আমার স্ত্রীকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে । স্ত্রী-স্বাধীনতার দ্বার খোলবার এক মহা সুযোগ উপস্থিত । তখন আবার কলকাতা ও বোম্বায়ের মধ্যে রেলপথ প্রস্তুত হয়নি-জাহাজে করে যেতে হবে । বাবামহাশয় তাতে কোন উচ্চবাচ্য করলেন না । এখন কথা হচ্ছে ঘাটে উঠা যায় কি করে ? গাড়ী করে ত যাওয়া চাই ? আমি প্রস্তাব করলুম। বাড়ী থেকেই গাড়ীতে উঠা যাক। কিন্তু বাবামহাশয় তাতে সম্মত হলেন না-বল্পেন মেয়েদের পান্ধী করে যাবার নিয়ম আছে তাই বুক্ষ হোক। অসূর্য্যাম্পশ্যা কুলবধু কর্ম্মচারীদের চ’খের সামনে দিয়ে বাহির দেউড়ি ডিঙ্গিয়ে গাড়ীতে উঠবেন, এ তার কিছুতেই মনঃপুত হল না । এই ত গেল পর্দা ভাঙ্গার প্রথম অবস্থা । আমি প্রথমবার বোম্বাই থেকে বাড়ী এসে আমার স্ত্রীকে গভর্ণমেণ্ট হাউসে নিয়ে গিয়েছিলুম। সে কি মহা ব্যাপার। শত শত ইংরাজমহিলার মাঝখানে আমার স্ত্রী-সেখানে একটিমাত্র বঙ্গবালা-তখন প্রসন্নকুমার ঠাকুর জীবিত ছিলেন। তিনি তা ঘরের বৌকে প্রকাঙ্গ