পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRr শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচািরত [ ৫ম পরিঃ তঁহাকে যে আনিয়া মহালক্ষ্মীর কাছে রাখিতে পারিলাম না, এজন্য মহা দুঃখ হইল। এল এ পরীক্ষার জন্য দুরন্ত শ্রম।--তারপর, আমার এল-এ পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হওয়া। যোগেনের বিধবাবিবাহের ফলস্বরূপ আমাদিগকে কিরূপ নির্য্যাতন ভোগ করিতে হইয়াছিল, অগ্রেই তাহার বর্ণনা করিয়াছি। বিবাহের কিছুদিন পরেই মহালক্ষ্মীর স্বাস্থ্য ভগ্ন হইতে লাগিল ; চাকর পাওয়া যায় না, রাধুনী পাওয়া যায় না, সেই অবস্থাতেই তাঁহাকে রাধিতে হয়। এদিকে, যোগেন আত্মীয়-স্বজনের নির্য্যাতনে অস্থির হইয়া পড়িলেন ও ঈশান মেডিকেল কলেজের ডিউটী লইয়া সর্ব্বদা অনুপস্থিত থাকিতেন। বলিয়া চাকরের অনেক কাজ আমার উপর পড়িয়া যাইতে লাগিল, বাজার করা, কঁধে করিয়া তিনতলায় জল তোলা প্রভৃতি কাজ আমাকেই করিতে হইত,—এসকল পূর্বেই বলিয়াছি। এইসকল করিয়া আমি পড়বার সময় বড় পাইতাম না। সম্মুখে বৎসরের শেষে পরীক্ষা আসিতেছে, কিন্তু তাহার জন্য প্রস্তুত হইতে পারিতেছি। না। এইরূপে ১৮৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। সংস্কৃত কলেজের তদানীন্তন অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী মহাশয় আমাকে অতিশয় ভালবাসিতেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বন্ধু ছিলেন। তিনি এই বিধবাবিবাহে সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছিলেন, কিন্তু আমার লেখাপড়া সব গেল দেখিয়া দুঃখিত হইতেছিলেন। তিনি । অক্টোবরের প্রথমে আমাকে ডাকিয়া বলিলেন, “তুমি একটা ভাল কাজে আছ, কিছু বলিতে পারি না ; কিন্তু আমি তোমার জন্য চিন্তিত হয়েছি। তুমি আগামী পরীক্ষাতে কলেজের মুখ রাখবে বলে মনে আশা করছিলাম, কিন্তু এখন ভয় হচ্ছে, তুমি স্কলারশিপ পাওয়া দূরে থাক, পাস হও কি না। সন্দেহ ।” তাহার কথা শুনিয়া মনে হইল, আমি যেন কোন পাহাড়ের