পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৮, ৬৯ ] বিধবাবিবাহের পর উপেন্দ্রনাথ দার্সের সহিত সম্বন্ধ ১৩৭ উপেন ঋণ শোধের প্রতি দৃষ্টি না পাখিয়া ধার করেন, বাড়ী ভাড়া করিয়া ভাড়া না দিয়া রাতারাতি পলাইয়া অন্য বাড়ীতে যান, ইত্যাদি। দুই এক বার নিজে কৰ্জ করিয়া টাকা দিয়া এরূপ অবস্থা হইতে র্তাহাকে সপরিবারে উদ্ধার করিতে হইল। তথাপি তাহার প্রতি বিশ্বাস ভাঙ্গিতে অনেক দিন গিয়াছিল। এক বার রাত্রি দুইটার সময় উপেন সপরিবারে পলাইয়া কলিকাতা হইতে অমৃতবাজারের শিশিরকুমার ঘোষের বাড়ীতে যান। তখন শিশির বাবুর অগ্রসর সংস্কারক ও ব্রাহ্ম ছিলেন। সেই পাত্রে আমি যোগেন ও উমেশ মুখুয্যে সশস্ত্র হইয়া তাদের স্ত্রীপুরুষকে আগুলিয়া নারিকেলডাঙ্গার খালে নৌকায় তুলিয়া দিয়া আসিয়াছিলাম। এখন মনে হইলে হাসি পায় । ইহার পর ডাক্তার লোকনাথ মৈত্র কিছু দিনের জন্য নিজ ব্যয়ে উপেন্দ্র ও তাহার স্ত্রীকে কাশীতে নিজ ভবনে লইয়া যান, এবং তঁহাদের ভরণপোষণ নিৰ্বাহ করিতে থাকেন । এইরূপে এক বৎসরের অধিক কাল গত হয়। সেখানে উপেন গোপনে দেনা করিয়া লোকনাথ বাবুকে ঋণগ্রস্ত করিয়া পীড়িত অবস্থায় কলিকাতায় আসেন। আসিয়া কিছু দিন আমার বাড়ীতে থাকেন । ইহা যদিও পরবর্তী কালের ঘটনা, তথাপি এখানেই তাহার বিবরণ দিতেছি । আমি তখন ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের নিকট ব্রাহ্মধর্ম্মে দীক্ষিত হইয়া, পিতা কর্তৃক গৃহ হইতে তাড়িত হইয়া, কলিকাতায় কলেজ স্কোয়ারের উত্তরে একটি গলিতে এক জন ব্রাহ্ম বন্ধুর সহিত এক গৃহে বাস করিতেছিলাম। আমার কলেজের স্কলারশিপ মাত্র ভরসা। তাহাতে একটি ঘর ভাড়া করিয়া কোনও রূপে চালাইতেছিলাম । ইহার মধ্যে উপেন্দ্রনাথ আমাকে সংবাদ না দিয়া, গুরুতর পীড়া লইয়া, স্ত্রী ও একটি শিশু পুত্র সহ কাশী হইতে আসিয়া আমার বাসার দ্বারে উপস্থিত। আমি সংবাদ পাইয়া উপেনকে সপরিবারে গাড়ি হইতে নামাইয়া নিজের ঘরে আনিলাম। এক জন বন্ধু আমার