পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচরিত [ ৩য় পরিঃ তাহা দিত না । বহুবাজার পাড়া হইতে কলেজ উঠিয়া গেলে আমরা তাহাকে হারাইলাম। উন্মাদিনী ও প্রপিতামহের মৃত্যু।—এই জেলিয়াপাড়াতে থাকিবার সময় আমাদের পরিবারে দুইটি দুর্ঘটনা ঘটে। প্রথম, উন্মাদিনীর মৃত্যু ; দ্বিতীয়, আমার প্রপিতামহদেব রামজয় ন্যায়ালঙ্কারের স্বৰ্গারোহণ। এক বার গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ীতে গেলাম। যাইবার সময় কলিকাতা হইতে হাটিয়া বাড়ীতে যাই। প্রথম দিন চাঙ্গড়িপোতায় মামার বাড়ীতে গিয়া এক রাত্রি যাপন করিলাম ; পর দিন প্রত্যুষে পদব্রজে যাত্রা করিয়া বাড়ীতে গেলাম। বার বৎসরের বালকের পক্ষে ২৮ মাইল পথ হঁটিয়া যাওয়া বড় সহজ কথা নহে; আমি ত গলদঘর্ম্ম হইয়া বাড়ীতে গিয়া উপস্থিত। কিন্তু উন্মাদিনীকে আমি এমনি ভালবাসিতাম। যে বাড়ীতে গিয়া যখন দেখিলাম উন্মাদিনী ঘরে নাই, তখন যেন সব শূন্য দেখিলাম। মাকে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বলিলেন, সে বাহিরে আমের বাগানে গিয়াছে। তৎক্ষণাৎ সেই দিকে দৌড়। মা চীৎকার করিতে লাগিলেন, “ওরে বোস, ওরে দাড়া, তাকে ডাকচি,” কে বা তাহা শোনো! আমি একেবারে গিয়া উন্মাদিনীকে বুকে তুলিয়া ঘরে আনিয়া। তবে নিঃশ্বাস ফেলিলাম । এই উন্মাদিনীই সেই গ্রীষ্মকালে মারা পড়িল। বাবা এক দিন তাহাকে সঙ্গে করিয়া জমিদার বাবুদের বাগানে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার প্রিয়নাথ রায়চৌধুরীর* সহিত দেখা করিতে গেলেন। তিনি উন্মাদিনীকে আদর করিয়া লিচু খাওয়াইলেন। উন্মাদিনী আনন্দিত অন্তরে হাসিতে হাসিতে বাবার সঙ্গে ঘরে ফিরিয়া আসিল। আসিয়াই তাহার দারুণ কলেরা রোগ দেখা দিল। এক বার ভেদ এক বার বমি হইয়াই সে যেন চুপূসিয়া

  • viv b cwr