সত্য। মহেন্দ্রের কাছে সেইরূপই শুনিলাম। এক্ষণে সায়াহ্ন কাল উপস্থিত, আমি সায়ংকৃত্যাদি সমাপনে চলিলাম। তৎপরে নূতন সন্তানদিগকে দীক্ষিত করিতে প্রবৃত্ত হইব।
ভব। সন্তানদিগকে? কেন, মহেন্দ্র ব্যতীত আর কেহ আপনার নিজ শিষ্য হইবার স্পর্ধা রাখে কি?
সত্য। হাঁ, আর একটি নূতন লোক। পূর্ব্বে, আমি তাহাকে কখন দেখি নাই। আজি নূতন আমার কাছে আসিয়াছে। সে অতি তরুণবয়স্ক যুবা পুরুষ। আমি তাহার আকারেঙ্গিতে ও কথা বার্তায় অতিশয় প্রীত হইয়াছি। খাটী সোণা বলিয়া তাহাকে বোধ হইয়াছে। তাহাকে সন্তানের কার্য শিক্ষা করাইবার ভার জীবনন্দের প্রতি রহিল। কেন না, জীবানন্দ লোকের চিত্তাকর্ষণে বড় সুদক্ষ। আমি চলিলাম, তোমাদের প্রতি আমার একটি উপদেশ বাকি আছে। অতিশয় মনঃসংযোগপূর্ব্বক তাহা শ্রবণ কর।
তখন উভয়ে যুক্তকর হইয়া নিবেদন করিলেন, “আজ্ঞা করুন।”
সত্যানন্দ বলিলেন, “তোমরা দুই জনে যদি কোন অপধ করিয়া থাক, অথবা আমি ফিরিয়া আসিবার পূর্ব্বে কব, তবে তাহার প্রায়শ্চিত্ত আমি না আসিলে কবিও না। আমি আসিলে, প্রায়শ্চিত্ত অবশ্য কর্তব্য হইবে।”
এই বলিয়া সত্যানন্দ স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন। ভবানন্দ এবং জীবামন্দ উভয়ে। পরস্পরের মুখ চাওয়াচায়ি করিলেন।
ভবানন্দ বলিলেন, “তোমার উপর না কি?”
জীব। বোধ হয়। ভগিনীর বাড়ীতে মহেন্দ্রের কন্যা রাখিতে গিয়াছিলাম।
ভব। তাতে দোষ কি, সেটা ত নিষিদ্ধ নহে, ব্রাহ্মণীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়া আসিয়াছ কি?
জীব। বোধ হয় গুরুদেব তাই মনে করেন।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
সায়াহ্নকৃত্য সমাপনান্তে মহেন্দ্রকে ডাকিয়া সত্যানন্দ আদেশ করিলেন,
“তোমার কন্যা জীবিত আছে।”
মহে। কোথায় মহারাজ?