পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দী বাঈ

গণ্ডস্থল ও কৃষ্ণকুঞ্চিত কেশদাম, সদা-প্রফুল্ল ভাব ও পরিচ্ছন্নতাদি দর্শনে সকলেই মুগ্ধ হইত। খেলায় তাহার সমকক্ষ কেহ ছিল না। পঞ্চম বর্ষ বয়সে তাহার বসন্ত রোগ হয়। সে যাত্রা যমুনা বহু কষ্টে রক্ষা পায়। তদবধি তাঁহার কান্তি ঈষৎ শ্যামভাব ধারণ করিল এবং তাঁহার শ্রবণশক্তির হ্রাস হইল।

 ছয় সাত বৎসর বয়ঃক্রমকালে যমুনা একবার স্বীয় গৃহের সম্মুখে একটি পাদরিকে বক্তৃতা করিতে শুনিয়াছিল। তদবধি সে স্বীয় সঙ্গিনীদিগকে একত্র করিয়া তাহাদিগের সমক্ষে প্রায়ই পাদরি সাহেবের অনুকরণে বক্তৃতা করিত। বলা বাহুল্য, তাহার বক্তৃতায় বক্তব্য বিষয় কিছুই থাকিত না। তথাপি তাহার বক্তৃতায় হাব-ভাব, আবেগ ও পাদরির অবিকল অনুকরণ দেখিয়া সকলকেই বিস্মিত হইতে হইত। জননী তাহাকে “পাদরিণী” বলিয়া বিদ্রূপ ও তিরস্কার করিলে, সে কিয়ৎকালের জন্য বক্তৃতায় আগ্রহ পরিত্যাগ করিত।

 বাল্যকালে বালিকারা সাধারণতঃ গার্হস্থ্য ধর্মের অনুকরণে পুতুল খেলায় বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করে। কিন্তু যমুনা পুতুল খেলিতে ভালবাসিত না। যে সকল খেলায় লম্ফ ঝম্প ও দৌড়াদৌড়ি বেশী, সে সকলের প্রতি তাহার বিশেষ প্রীতি প্রকাশ পাইত। তদ্ভিন্ন ঠাকুর পূজা করা, খেলাঘর তৈয়ার করা ও বাগান করা প্রভৃতি কার্যে তাহার আন্তরিক অনুরাগ ছিল। বাগানে শাক শব্‌জী ও ফুলের গাছ রোপণ করা তাহার নিত্যকর্ম্ম ছিল বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। প্রায় প্রত্যহ তাহার রোপিত গাছগুলি