বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

বলছিলেন যে দিন তাঁর বাড়িতে আমি প্রবেশ করি সে রাত্রেই তাঁর ভাই নিমোনিয়া রোগে মারা যান এবং সেজন্যই আমাকে তিনি স্থানান্তরিত করে ছিলেন। আমাদের দেশের মত আফগানিস্থানেও কুসংস্কার আরও একটু বেশি করে রয়েছে। তাদের ধারণা হয়েছিল আমিই মৃত্যুকে সংগে করে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলাম। মৃত্যু ভদ্রলোকের ভাইকে নিয়ে গেছে, আর কাকেও না নিলেই রক্ষা।

 প্রথমদিন সহর বেড়িয়ে বুঝতে পারলাম এখানে অনেক জাতের লোক বাস করে। জাতবিচার নৃতত্ব মতে করেছিলাম। বাস্তবিক পক্ষে যাকে হরেক রকমের জাত বলেছি সেটি সকলের চোখে ধরা পড়বে না। এ সংবাদটি নৃতত্ববিদদের জন্য। অবশ্য ধর্মের দিক দিয়ে তিনটি ধর্মের লোক দেখলাম। হিন্দু, মুসলমান এবং ইহুদী। এখানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচলিত ছিল, বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্মের নাম-গন্ধ নাই, শুধু রয়েছে কয়েকটি পাথরের মূর্তি। সেই মূর্তিগুলিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু এখনও সেই পাথরের মূর্তি পুরাতন যুগের মানুষের হস্ত শক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন করে দাড়িয়ে আছে। অবশ্য পাথরগুলির বিকলত্ব হয়েছে। আজ যদি কেউ এই পুরাতন পাথরের মূর্তিগুলিতে মানুষের চোখের অন্তরাল করতে চায়, তবে হাজার লোক মিলে যে কাজটি দশ দিনেই শেষ করতে সমর্থ হবে।

 সহরদেখা শেষ করে গ্রামের দিকে চলে গিয়েছিলাম। গ্রামের দিকে যেয়েই পাথরের পাশেই চুনাপাথর দেখে মনে হল, যদি ভূমিকম্প হয়, তবে এই সহর হ্রদে পরিণত হতে কতক্ষণ। কিন্তু সে দৃশ্য চিন্তা করতেও ইচ্ছা হল না। গ্রাম ছেড়ে শহরে ফিরে এলাম।

 সেই বৎসরই কোয়েটাতে ভূমিকম্প হয়ে অনেক ধন এবং মানুষ নষ্ট হয়েছিল। আমি মনে করেছিলাম কান্দাহার সহর লোপ হয়ে একটি হ্রদে পরিণত হবে, তা হয় নি এমন কি কম্পনও হয় নি। কিন্তু নিশ্চয় করে বলতে পারি যদি হিমালয়