পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

একখানি সাপ্তাহিক কাগজ বার করেন, বোধ হয় ২।৩ বছর সেখানি চলেছিল; দেওঘরের বাড়ীতে আমরা তার ফাইল ছেলেবেলায় দেখেছি। দাদাবাবু ও বড় মামার আলমারি ভরা বই পড়ে আমার যা’ কিছু লেখা পড়া শেখা। নিতান্ত ছেলেবেলায় দাদাবাবুর দেখাদেখি যখন উপনিষদ গীতা ও পুরাণ পড়তে চেষ্টা করেছি তখন সংস্কৃতের কোন বোধই আমার গজায় নি। বারবছর বয়স থেকে নভেলের তো আমি ছিলুম পোকা। স্কুলের বই ছাড়া বাইরের বই পড়ার ঝোঁক আমাকে দিয়েছিলেন হেডমাষ্টার মশাই, সখারাম বাবু, বড় মামা ও দাদাবাবু। তারপর এলেন মেজদা ও সেজদা—দুই-ই সমান গ্রন্থকীট, তাঁদের অপূর্ব্ব পুস্তক সংগ্রহ নিয়ে আমার জ্ঞান-তৃষ্ণার্ত্ত জীবনে দু’জনে পূর্ণচন্দ্রের মত উদয় হলেন। সে কথা পরে বলবো।

 দেওঘর স্কুলে ছাত্র জীবনে বলতে গেলে আমার অভিভাবক কেউ ছিলেন না। নামে মাত্র অভিভাবক ছিলেন দাদাবাবু ও বড়মামা। যখন নীতি-বাগীশ আত্মীয়রা হঠাৎ আবিষ্কার করলেন, যে, আমি লুকিয়ে লুকিয়ে রাঙা মাকে চিঠি লিখি তখন একটা ধমক চমক টিকা টিপ্পনীর ঝড় উঠলো—একেবারে Tempest in a Tea pot আর কি। তাঁরা সব এসে দল বেঁধে দিদিমাকে মুখপাত্র করে দাদাবাবুর কাছে লাগালেন, “ও যদি এ রকম কেলেঙ্কারী করে, একটা বাজারে বেশ্যার সঙ্গে সম্পর্ক রাখে, তা’ হলে ওর বোনের বে হবে না যে!” কি অকাট্য যুক্তি নিষ্ঠুরতা ও নির্ম্মমতার সপক্ষে!

১০৩