পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

এই সেদিন অবধি তাঁর রচিত ভক্তি গদগদ শ্যামা সঙ্গীত আমি দেখেছি। হিন্দুর ঘরে জন্মেও মাকে আমার একান্তই খুব ভালবেসে বাবা ব্রাহ্ম-পরিবারে বিয়ে করেছিলেন। আমার ঠাকুরমা অতিবড় গোঁড়া নিষ্ঠাবতী মেয়ে ছিলেন বলে তাঁকে লুকিয়েই এই বিধর্ম্মী বিয়ে বাবাকে করতে হয়েছিল। কাকা শ্রীবামাচরণ ঘোষ কেবল দাদার এই কাণ্ডটার খবর রাখতেন, হয়তো উদ্যোগ আয়োজন করে সাহায্যও করেছিলেন। তার পর ঠাকুরমা যখন জানতে পারলেন তখন কাকাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন এই বলে, যে, “ঐ ভাইয়ের হয়ে তুই যেমন আমাকে ঠকালি তেমনি ঐ ভাইয়ের তুই হবি চক্ষুশূল।” কয়েক মাস যেতে না যেতে এই ভীষণ অভিশাপ ফলেছিল। কি সূত্রে জানি নে, বাবাতে ও কাকাতে মনান্তর হয় এবং বাবার জীবিতকাল অবধি তাঁদের মুখ দেখাদেখি ছিল না। বাবা মারা যাবার পর কাকা যখন আমাদের গোমেস লেনের বাড়ীতে দেখা করতে এলেন তখনই আমরা জানতে পারলাম যে আমাদের কাকা বলে কেউ একজন এই ধরাধামে আছে।

 মানুষ একটা অসীম অতল ওতপ্রোত বিরাজিত শক্তির সমুদ্রে বাস করছে, সেই শক্তিতেই তার জন্ম, তার গতিবিধি ও তার লয়। কৌশলটি জানা থাকলে স্বেচ্ছামত সেই শক্তি-সমুদ্র থেকে সে অজস্র শক্তি নিতে ও বিকীরণ করতে পারে। আমরা সারা জীবন সজ্ঞানে নয় কিন্তু অজ্ঞানে করছিও তাই, আমাদের বাসনা কামনা হচ্ছে সেই শক্তি টানবার— আকর্ষণ করে নিজের