পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

এখানে তাঁর অনেক বৎসর কাটে। রংপুরে তাঁর এত ক্ষমতা ও ও জনপ্রিয়তা হয়েছিল যে একটি সমগ্র জেলার এই হর্ত্তা কর্ত্তা বিধাতাটিকে জেলার সর্ব্বময় অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হতে দেখে গভর্ণমেণ্ট ভয় পেয়ে যান এবং তাঁকে কিছুদিনের জন্যে ভাগলপুরে বদলী করে তার পর খুলনায় সিভিল সার্জ্জন করে পাঠান। শ্যামবর্ণ, আকর্ণবিস্তৃত চোখ, সৌম্যদর্শন এই মানুষটি শীঘ্রই খুলনারও হয়ে উঠলেন প্রাণ। সেখানকার পুলিশ ম্যাজিষ্ট্রেট, স্কুল,জমিদার, আমলা, প্রজা কারুর ডাক্তার কে ডি ঘোষকে বিনা এক দিনও চলতো না। ম্যালেরিয়া প্রধান খুলনাকে ম্যালেরিয়াশূন্য করে হাসপাতাল, স্কুল, মিউনিসিপালিটি সমস্ত নিজের হাতে গড়ে এই মুকুটহীন রাজা বহু বৎসর খুলনায় রাজত্ব করেছিলেন। আজও খুলনা বা রংপুরবাসী তাঁকে ও তাঁর কীর্ত্তি কলাপকে ভোলে নি।

 বাবা দ্বিতীয়বার বিলাত যান তাঁর তিন ছেলে, এক মেয়ে ও আমার মাকে নিয়ে, শিক্ষার জন্য ছেলেদের সেখানে রেখে আসবার উদ্দেশ্যে। আমাকে গর্ভে নিয়ে মায়ের আমার এই প্রথম ও শেষ নীল সমুদ্রে ডোঙা ভাসানো! বিলাতে পৌঁছিয়ে সেখানে (Crystal Palace) মর্ম্মর প্রাসাদের সামনে লণ্ডনের উপকণ্ঠে নরউডে আমার জন্ম। প্রায় সমুদ্র গর্ভে জন্ম বলে নাম হ’লো বারীন্দ্রকুমার। আগেই বলেছি দাদার জন্মের পর থেকে মা অল্পে অল্পে পাগল হচ্ছিলেন। মায়ের ডাক্তারের নাম ছিল ম্যাথিউ, আর ক্রাইষ্টের জন্মের পরই ৫ই জানুয়ারী আমার জন্ম

১৪