পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

কলেজে যে কত সামান্য শিক্ষাই পেয়েছি তা শুনলে নিয়মিত শিক্ষার পক্ষপাতী মানুষরা অবাক হয়ে যাবেন।

 এক দিন সকাল বেলা রোহিণীর বাড়ীর পূবের বারাণ্ডায় আমি একা খেলা করছি, একজন মোটা কসমের ওভারকোটপরা ভদ্রলোক এলেন। আমি ত অবাক্। আমাদের বাড়ীতে জন মানুষ কখনও আসতো না, সে অঞ্চলে প্রসিদ্ধ পাগলী মেম সাহেবের ভয়ে ও-বাড়ীর ত্রিসীমানায় কাউকে ঢুকবার সাহস রাখতে দেখি নি। মা মাঝে মাঝে রেগে উগ্রচণ্ডা হয়ে থাকতেন; তখন বাড়ীর হাতার মধ্যে অপরিচিত মানুষ দেখলে চীৎকার করে গালাগাল দিতেন, ছোরা দেখাতেন, দরকার হ’লে তাড়াও করতেন। তারা তখন প্রাণ ভয়ে পালাতে পথ পেতো না। তারিণী বাবুর একজন মালী ছিল, সে থাকতো ভয়ে তটস্থ হয়ে, মাঝে মাঝে তরকারী ও ফলের ভেট দিয়ে আমার মাকে তুষ্ট রাখতো; বকসিস্‌টা আসটাও মায়ের প্রসন্ন অবস্থায় আদায় করতো কম নয়। বাবুটি এসে মাকে ডেকে কি আলাপ পরিচয় করলেন। আমাকে ফল মেঠাই কি সব দিলেন আর যাবার সময় চুপি চুপি অনেক তথ্য তালাস নিলেন, তারপর চুপি চুপি চাপা গলায় বললেন, “তুমি কোথায় শোও?”

 আমি। এ-ঘরে।

 বাবু। আর মা?

 আমি। ঐ ও ঘরে।

 বাবু। রাত্রে এই দরজাটা ভেতর থেকে খুলে রেখো,

৩৬