পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

চলে, সে হচ্ছে একান্তই প্রকৃতির বশে। ঠিক দৈহিক ক্ষুধা তৃষ্ণার মত আমাদের বুভুক্ষু হৃদয় ও প্রাণের আছে দুর্দ্দম বেগ যা’ অনুপযুক্ত নির্ম্মম মানুষের কাছেও আমাদের কেশাকর্ষণ করে আত্মসমর্পণ করায়,—তা সে স্বামী হোক, পুত্র হোক, বন্ধু হোক, প্রণয়ী হোক, সামাজিক হিসাবে প্রণয়ের যত বড়ই অপাত্র হোক না কেন—প্রণয় বা স্নেহ ভালবাসা পাত্রাপাত্র বাছে না—cupid is blind, অন্ধ লতার মত কাটা গাছকেও সে অবাধে আশ্রয় করায়। তারপর এদিক দিয়ে আরও অনেক জটিল তত্ত্ব আছে উদ্ঘাটন করবার। এ জগতে কে যে কাকে ভালবাসে, কার সত্তার কোন্ স্তর থেকে দুর্দ্দম টান এসে আর একজনের কোন্ দিকটা বিহ্বল করে তোলে তার ওপর সমস্ত ব্যাপারটা নির্ভর করে। সে কথা প্রসঙ্গান্তরে বলবো।

 মাসের মধ্যে দু’একবার বাবা আসতেন আর ২।৪ দিন থেকে চলে যেতেন। কলকেতায় থাকার সময়ে তাঁর সঙ্গে আমরা যেতুম গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে খোলা ফিটনে বসে, এই সময়টির জন্যে সাহেব আমার tip-top বাবার পাশে মা বসতেন বুক-খোলা গাউন পরে নানা ফুল-ফলে ডরা লেডিজ হ্যাট মাথায় দিয়ে রুমাল হাতে। সে বেশেও রূপসী ম আমার গড়ের মাঠ ও ইডেন গার্ডেন আলো করে চলতেন তাঁর সম্রাজ্ঞীর বাড়া লাবণ্যে ও শ্রী গরিমায়। এই মা যে কে, কোথা থেকে এসে কবে আমার বাবার শূন্য জীবন সুখের প্লাবনে ভরে দিয়ে তাঁর ভাঙা সংসার আবার গড়ে তুলেছিলেন