পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

যখন বিচার করতেন তখনও বাবা থাকতেন চেয়ার নিয়ে তাঁর ডান পাশে বসে—পরামর্শ দাতা রূপে। জেলে সিভিল সার্জ্জনরূপে বাবাই ছিলেন হর্ত্তা কর্ত্তা বিধাতা, জেলার সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট আদি কর্ম্মচারীরা ছিল নামকাওয়াস্তে। পি ডবলিউ ডি, স্কুল, ডিস্পেন্সারী যা’ কিছু খুলনার ছিল সর্ব্বই সর্ব্বঘটেই এই মুকুটহীন রাজার ছিল দোর্দ্দণ্ড প্রতাপ—অদ্ভুত একাধিপত্য।

 কলকেতার বাড়ীতে একদিন বাবা এসেছেন। গভীর রাত্রে একটা সোরগোল শুনে আমি জেগে উঠে শুনলুম ভূত বেরিয়েছে, আমাদের দারোয়ান তেওয়ারীজীর পায়ের বুড়ো আঙ্গুল চেপে ধরেছিল। কলকেতার গোমস্ লেনের বাড়ীখানি ছিল বাঙলো প্যাটার্ণের। সামনে গেট, একটু উঠান পার হয়ে কয়েক ধাপ সিঁড়ি, তারপর বারাণ্ডা; সামনে একটি বড় হল ঘর, তার পরে পাশাপাশি দু’খানি এবং তারও পরে ঠিক অমনি দু’খানি মোট চারখানি ঘর। বারাণ্ডাটি চলে গেছে ঘুরে এই হল ঘর ও দু’খানি ঘর বেড়ে পিছনে বাবুর্চ্চিখানার দিকে। এই দিকে ছাদ, কাঠের সিঁড়ি উঠে গেছে প্রথমে নীচু রান্নাঘর ও দাসদাসীদের ঘরের (out houseএর) ওপর এবং পরে আসল বাড়ীটির ওপর আর এক প্রস্ত ঘুরে উঠেছে প্রকাণ্ড ছাদে। গেট দিয়ে ঢুকে দুই দিকের বারাণ্ডা বেয়ে রান্নাঘরের নীচু উঠানে নেমে আাবার একটি সরু রাস্তা বেয়ে সমস্ত বাড়ীখানিকে পাক দিয়ে আসা যায় পুনশ্চ সদর গেটের কাছে। ভূতটি নাকি কুলি ভূত, এই বাড়ী হবার সময় সেই যে

৪৮