পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

চুমু খেয়ে আবার সেই ঘোড়ার পিঠে এসে বস্‌তে হবে; তার চাই ভীমসেনী বীর, ঘটোৎকচ রাক্ষস, চারটে নায়ক নিয়ে একটা মেয়ের নাকানী চোবানী খাওয়া। পাঠকদের মধ্যে এই জাতীয় প্রকৃতি যাঁদের বেশি তাঁরা আমার সাইক্লোনিক জীবনের এই ক’টা পরিচ্ছেদ বাদ দিয়েই পড়বেন; মাঝে মাঝে শান্ত একটানা দিনের এই রকম ছুটিটা ছাটাটা পেয়েছিলুম বলেই পরে কর্ম্মের টানাপোড়েনে অতখানি ধকল সয়ে আজও টিঁকে আছি।

 এই গোমস লেনের বাড়ীতে আর যারা আসতো যেতো তাদের মধ্যে ছিল এক পুলিশের সাব-ইন্স্‌পেক্টরের পরিবার। এরকম strange bed fellows আমাদের জীবনে অহরহই জুটছে, নইলে কে ডি ঘোষের মত অতবড় সাহেবের পরিবারের বন্ধু হ’লো কিনা নীরদের মা! পুলিশ দারোগাটি ছিলেন মোটা সোটা, দীর্ঘাকার, বেশ একটু স্থূলবুদ্ধি জীব এবং বেহিসেবী পাঁড় মাতাল। তাঁর বৌটি ছিল ছোট্ট খাট্ট, সদাই দুঃখে ম্রিয়মান অথচ সদাই সুখের কাঙাল জীব। তাদের ছেলে হয়েছিল চার পাঁচটি, মেয়ে ছিল বলে আমার স্মরণ নেই। স্বামীর অত্যাচারে ও মাতলামোর দুঃখে মেয়েটি আত্মঘাতী হতে গেছিল দু’ তিনবার। এখনও আমার মনে পড়ে তার গলায় ভীষণ একটা কাটার চিহ্ন, একবার গলায় ক্ষুর চালিয়ে এমন কেটে ফেলেছিল যে প্রাণে প্রাণে বেঁচে উঠতে লেগেছিল ছয় মাস; আফিং খেয়ে মরতে সে প্রায়ই যেতো। আমার “মুক্তির

৫৬