পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তা’ ব’লে বুঝান অসম্ভব। সব আনন্দই আসলে ব্রহ্মানন্দেরই মত মুক্তাস্বাদনবৎ—অবাঙমনসগোচরম্, শুধু মাঝখান থেকে জীব বাবুজীউ মেরে দেন আনন্দটি। এই আত্মাপক্ষীটি কোন্ অচিন লোকের নন্দন কাননের শুকসারী তা জানি নে, কিন্তু রক্ত মাংসের এই চোদ্দপোয়া দেহকলটি বানিয়ে তা’তে কয়েকটি অতিমাত্রায় স্পর্শালু hypersensitive মাংস খণ্ড জুড়ে দিয়ে এবং চারধারে রূপ রস স্পর্শ গন্ধের লোভন আয়োজন সাজিয়ে কি আপ্রাণ চেষ্টাই চলছে সেই অচিন পাখীকে মাটির ধরায় আটকে রাখতে। কেন এত প্রলোভন, এত সাধাসাধি, এত আদর সোহাগ কে জানে? এত আয়োজন ফাঁসিয়ে দিয়ে সে কিন্তু একদিন পিঁজরে কেটে অচিন লোকে উড়ে যাবেই।

 এই পরিবারে একটি ছেলে রোজ রাত্রে ও দিনে চর্ব্ব্য চোষ্য আহার করে এক মিনিট পরে সব বমি করে আসতো; এই ছিল তার নিত্য কার্য্য অথচ শরীর ছিল তার আমাদের চেয়ে মোটা সোটা। ঐ কয়েক মিনিটে তার সজাগ দেহযন্ত্র প্রাণ ধারণের আবশ্যক মত উপাদান গোছালো গৃহিণীর মত সরিয়ে নিতো বোধ হয়। কোন ডাক্তারেই ধরতে পারে নি ছেলেটার কি এ রোগ এবং কি তার প্রতিকার।

 রোহিণী থেকে আমার আসবার বোধ হয় কয়েক মাস কি প্রায় এক বছর পরে একদিন ঘুম থেকে জেগে মা চোখের জলে ভেসে বললেন, যে তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন, একটা গভীর অতল সমুদ্রে আমি তলিয়ে যাচ্ছি আর নিঃশ্বাস রোধ করে মা ডুবে

৫৮