পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

আনন্দাদেব খল্বিমানি ভূতানি জায়ন্তে
আনন্দেন যাতানি জীবন্তি
আনন্দম প্রয়ন্ত্যভিসংবিশন্তি
তদ্ ব্রহ্ম।

ব্রাহ্ম সমাজের কোলে আমার জন্ম, বঙ্গদেশ ও বঙ্গসমাজ ব্রাহ্ম সমাজের কাছে অনেক কিছু পেয়েছে। কিন্তু ওর বিরুদ্ধে আমার নালিশেরও অন্ত নেই—বিশেষ করে নীতিজ্ঞানের অতিমাত্রায় আড়ষ্ট পিউরিটানী সাধারণ সমাজের বিরুদ্ধে। ঠেকায় এরা সবই করে অথচ হিন্দুদের জীবনের কত কিছুর বিরুদ্ধে নিরাকার নাক এদের কুঁচকেই আছে। থিয়েটার তার মধ্যে একটি, যেহেতু ওখানে নটীর নৃত্য হয়; অথচ নটীর নৃত্য না দেখেও ব্রাহ্ম-যুবকদের ভেতর কুরুচি ও কামবৃত্তির খেলা এক চুল কম তো দেখি নে। বাহিরটা ধোপদস্ত রেখে জেণ্টলম্যান সেজে থাকার এই যে মানবী প্রবৃত্তি এর মত হাস্যকর জিনিস আর কি আছে? হিন্দু ঘরের অনেক মেয়েকে ঝগড়া ঝাটির মাঝে তারস্বরে চোখ মুখ ঘুরিয়ে বক্তৃতা করতে শুনি যে, সে কত বড় সতী, তার অনিষ্ট করতে গিয়ে হারাণ দত্ত পড়লো আর মরলো। এই লোক-দেখানো মরালিটি সেই ধরণের নিজের ঢাক নিজে পিটিয়ে সতীর বড়াই করার মতই ব্যাপার। নটীর নাচকে ভদ্রলোকের বাড়ীর অঙ্গনে এনে এখন রবীন্দ্রনাথ অনেক তথাকথিত সুরুচিবাগীশ ব্রাহ্মের মুখ বন্ধ করেছেন, এখন ভদ্রঘরের মেয়ে ও কুলবধূও নটীর কাজে আসরে নামছেন—

৬৩