পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তাঁদের নমস্যা পূর্ব্ববর্ত্তিনীরা ছিলেন রাজকন্যা শ্রেষ্ঠী-কন্যার দল, এই তাঁদের সব চেয়ে বড় নজির। আগেই বলেছি নারীর অঙ্গের সুললিত ছন্দোবদ্ধ গতি কতখানি কুরুচি জাগায় জানিনে, কিন্তু যে রসজগৎ সে মানুষের কাছে খুলে দেয় তা’র দাম দেয় কে? আর ঐ ভগবদ্দত্ত কুরুচিপূর্ণ বৃত্তিটা—ওটা তো সবারই কেশাকর্ষণ করে নানাবিধ কুকার্য্য দিবারাত্র করিয়ে নিচ্ছেই, ওটার হাত থেকে নিরাকার ভজেও যখন উদ্ধার নেই তখন নৃত্যগীত চিত্র প্রভৃতি কলারসের সুখে ও আনন্দে আমরা বঞ্চিত থাকি কেন?

 ষ্টারে তখন কিসের পালা দেখেছি তা আমার স্মরণ নেই, তবে তাজ্জব ব্যাপার, বিবাহ বিভ্রাট আদি নক্সাগুলির কথা বেশ মনে আছে। ব্রাহ্ম-সমাজ তখন ছিল থিয়েটারী ব্যঙ্গের প্রধান লক্ষ্য। সার্কাসেও যেতুম মাঝে মাঝে, সাহেব মেম সেজে পশুশালা, ইডেন গার্ডেন, বোটানিকেল গার্ডেনও দেখা হতো। কলকেতা বিস্বাদ একঘেয়ে লাগতে আরম্ভ করলে সপরিবারে খুলনা যাত্রার হিড়িক পড়তো। একবার বজরায় করে আমরা একমাসের মত বেরিয়ে পড়েছিলুম কালনার দিকে, কতদূর গিয়েছিলুম এখন আর মনে নেই। তবে গঙ্গার সে রজত ধবল কলনাদিনী স্রোতকণ্টকিত রূপ ভোলবার নয়। নদীতটের সেই গ্রাম্য ছবি—কুলবধূর পিতলের কলসী কাঁখে জ্বলভরা, হাতের খাড়ু বাউটি নেড়ে বাসন মাজা, বজরা দেখে আড় ঘোমটার ফাঁকে কাজল-কালো চোখে বিস্ময় নিয়ে থমকে

৬৪