পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

“ভোমরা রে
কি মধু পিইয়ে হলি ভোর?
তরল পরাণ তোর জমাট বাঁধিল রে!
গুন্ গুন্ গুন্ করে কত কেঁদেছিলি
কি মধু পড়িল মুখে চুপ হয়ে গেলিরে।”

 এই রকম ভাবের ও রসপূর্ণ কথা অকবিকে কবি করে ছাড়ে, আমি তো তখন তের বছর বয়স থেকে রাবীন্দ্রিক ঢঙে কবিতাই লিখছিলুম। প্রথমে কবি মানকুমারীর কবিতাই আমার কবিতা লেখার ছিল আদর্শ, তার পর এলেন তাঁর অপূর্ব্ব ঝঙ্কার ছন্দ ও মধু নিয়ে রবীন্দ্রনাথ। বৈষ্ণব কবিতা তখনও আমি পড়ি নি, রবীন্দ্রের ‘ভানুসিংহের পদাবলী’তে তার একটু পূর্ব্বাস্বাদ পেয়েছি মাত্র।

 অশ্বিনী বাবু বোধ হয় দু’বার দেওঘরে আসেন! সন্ধ্যার সময় তাঁকে নিয়ে আমরা বেড়াতে যেতুম, তাঁর ভক্তিযোগের সম্বন্ধে আলোচনা চলতো। তিনিও আমাকে বড়ই ভালবেসে ফেলেছিলেন। দাদাবাবুর তিনি ছিলেন অভিন্নহৃদয় সুহৃদ, আবার আমাদেরও ছিলেন তাই। এত শীঘ্র ষাট বছরের বুড়ো থেকে ছেলে অবধি সব মানুষকে আপন অন্তরঙ্গ করে নেবার শক্তি অশ্বিনী বাবুর মত আমি আর ২।৪ জনেরই মাঝে দেখেছি। ইন্দু বাবুর গানই মাত্র আমরা শুনতুম, তিনি ছিলেন বড়দের ও বুড়োদের সঙ্গী; অশ্বিনী বাবু ছিলেন কিন্তু আবাল বৃদ্ধ যুবা সবার সমান দরদী।

৯৩