পাতা:আমার জীবন.djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ আমার জীবন সন্তানকে ভবতরঙ্গ হইতে পার কর । তোমা ছাড়া থাকিতে পারি না । হে নয়নের নয়ন ! হে নয়নরঞ্জন ! তুমি আমার নয়নান্তর হইও না, আমার নয়ন যেন তোমার ঐ মোহন রূপে সর্বদা নিমগ্ন থাকে। হে মনের মন মনোধিপতি । আমার মনের সঙ্গে সম্মিলিত হও । আমার মন যন তোমা ছাড়া তিলার্ধ না থাকে। হে জীবনের জীবন ! হে জীবনকান্ত আমার, হৃদয়াসনে তুমি আসীন হও, আমার হৃদয় যেন তোমার মধুময় আলিঙ্গনে পরিপূর্ণ হইয়া প্রেমস্রোতে ভাসিয়া থাকে । এখনও আমার সেই শরীর সেই কাঠাম আছে ; কিন্তু পুর্বে যেমন ছিল, এখন তেমন নাই । আমি যে কর্ম ইচ্ছা করিতাম, সেই কর্মেই লাগিত । এখন আর শরীর-তরুণী তেমন চলে না। এক্ষণে আমার সেই শরীরের অবস্থা কি প্রকার হইয়াছে, তাহাও কিঞ্চিৎ বলি । চলিতে শকতিহীন জীর্ণ কলেবর । স্থানে স্থানে হচ্চে বাক লম্বিত অধর ॥ লোলচর্ম ক্রমে হ’ল শিরে শুক্ল কেশ । গলিত হয়েছে দস্ত ছাড়ি গণ্ড দেশ । সর্বাঙ্গের ভঙ্গী কি বলিব আমি আর । দিনে দিনে হচ্ছে মম বিকৃত আকার ॥ য হউক এখন আমার সেই শরীর থাকা ভার। এক্ষণে শরীর ক্রমে ক্রমে জীর্ণ হইয়া যাইতেছে । পরমেশ্বর যে সকল জিনিষ-পত্র দিয়া আমার শরীর-তরণী সাজাইয় দিয়াছেন, এক্ষণে তাহী ক্রমে ক্রমে আমার শরীর হইতে খুলিয়া লইতেছেন। এক্ষণে দেখিতেছি, সেই জীবনের জীবন আমার হৃদয়-সিংহাসনে চরণ দোলাইয়া বসিয়াছেন। এক্ষণে বোধ হইতেছে, যে সকল বস্তু দিয়া তিনি আমার শরীর সাজাইয়া দিয়াছিলেন, সেই সমুদয় জিনিষ-পত্র একেবারে খুলিয়া লইয়াই তিনি গাত্রোথমি করিবেন। সে যাহা হউক, আমি এই একটি আশ্চর্য কথা ভাবিতেছি । আমি ভারতবর্ষে আসিয়া এতকাল যাপন করিলাম এবং এখন পর্যন্তও আছি । ইহার মধ্যে আদ্য অস্ত সকল কৰা আমি পৃথক পৃথক করিয়া প্রকৃষ্টরূপে মনে করিয়া দেখিলাম