বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S Qbr छांद्भ*jक উর্বর, গাছপালাগুলিও যাহা পুতিয়াছিলাম, এদেশের আবহাওয়ার উপযোগী । কেবল সাটনের বীজের প্যাকেট লইয়া গোলমাল বাধিয়াছিল। প্রত্যেক প্যাকেটের উপর তাহারা ফুলের নাম ও কোন কোন স্থলে এক লাইনে ফুলেব সংক্ষিপ্ত বর্ণনাও দিয়াছিল। ভাল রং ও চেহারা বাছিয়া বাছিয়া যে বীজগুলি লাগাইলাম, তাহার মধ্যে ‘হোয়াইট বিম’, ও 'রেড ক্যাম্পিয়ন এবং ‘ষ্টিচওয়ার্ট” অসাধারণ উন্নতি দেখাইলা। “ফক্সগ্নাভা’ ও ‘উড অ্যানিমোন মন্দ হইল না। কিন্তু অনেক চেষ্টা করিয়াও “ডগ রোজ” বা ‘হনিসকল”-এর চারা বঁাচাইতে পারা গেল না। হলদে ধুতুরা জাতীয় এক প্রকার গাছ হ্রদের ধারে ধারে পুতিয়াছিলাম। খুব শীঘ্রই তাহার ফুল ফুটিল। যুগুলপ্রসাদ পুণিয়ার জঙ্গল হইতে বন্য বয়ড়া লতার বীজ আনিয়াছিল, চারা বাহির হইবার সাত মাসের মধ্যেই দেখি কাছাকাছি অনেক ঝোপের মাথা বয়ড়া লতায় ছাইয়া যাইতেছে। বয়ড়া লতার ফুল যেমনি সুদৃশ্য, তেমনি তাহার মৃদু সুবাস । হেমন্তের প্রথমে একদিন দেখিলাম বয়ড়া লতায় অজস্ৰ কুঁড়ি ধরিয়াছে। যুগলপ্রসাদকে খবরটা দিতেই সে কলম ফেলিয়া আজমাবাদ কাছারি হইতে সাত মাইল দূৰ্ববর্ত্তী সরস্বতী হ্রদের তীরে প্রায় দৌড়িতে দৌড়িতেই আসিল । আমায় বলিল-লোকে বলেছিল হুজুর, বয়ড়া লতা জন্মাবে, বাড়বেও বটে, কিন্তু ওর ফুল ধরবে না। সব লতায় নাকি ফুল ধরে না। দেখুন কেমন কুঁড়ি এসেছে ! হ্রদের জলে “ওয়াটার ক্রোফটি” বলিয়া এক প্রকার জলজ ফুলের গোঁড় পুতিয়াছিলাম। সে গাছ হু হু করিয়া এত বাড়িতে লাগিল যে, যুগলপ্রসাদের ভয় হইল জলে পদ্মের স্থান বুঝি ইহার বেদখল করিয়া ফেলে। বোগেনভিলিয়া লতা লাগাইবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শহরের সৌখীন পার্ক বা উদ্যানের সঙ্গে এতই ওর সম্পর্কটা জড়ানো যে আমার ভয় হইল সরস্বতী কুণ্ডীর বনে ফুলে-ভরা বোগেনভিলিয়ার ঝোপ ইহার বন্ত আকৃতি নষ্ট করিয়া ফেলিবে । যুগালপ্রসাদেরও এসব বিষয়ে মত আমার ধরণের। সেও বারণ করিল।