পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/৪৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাদের রজ্জ্বতে সর্পভ্রমের ন্যায় একটা ভ্রম জন্মে। যত দিন আমাদের সেই ভ্রম থাকে, ততদিন আমরা মায়ার ডোরে বাধা থাকি। যতদিন । মায়ার ডোরে বাধা থাকিব, ততদিন ভাবে যাতায়াত করিতেই হইবে ; ) জন্মমৃত্যুর অধীন থাকিয়া আমাদিগকে নানা ক্লেশ পাইতেই হইবে। এই মায়ার কার্য্য কিরূপ, র্তাহাও জানা আবশ্যক। ইহা জানিবার জন্য অনেক প্রতিভাশালীর মস্তিষ্ক আলোড়িত করিয়া দৰ্শন-শাস্ত্র আবিভূতি হইয়াছে। পাশ্চাত্য দার্শনিকগণ বলেন,-পরিদৃশ্যমান প্রপঞ্চ (phenomenon ) \S মূলতত্ত্ব ( nomenon ) હરે উভয়ের বিবাদ ভঞ্জন হইবার নহে। কারণ মূলতত্ত্ব মানব-বুদ্ধির অগম্য। অসম্পূর্ণ ইন্দ্রিয় লইয়া মানব কখনই ইহার চরম সিদ্ধান্ত করিতে পরিবে না। বিশ্বের স্বরূপ জানা যখন অসম্পূর্ণ মানবের সাধ্যায়ত্ত নহে, তখন ঐ বিষয় লইয়া বাজে কচ কচি করিয়া লাভ নাই। য়ুরোপীয়রা রাজুতে সর্পভ্রম করিয়া এই পথ ছাড়িয়া দিয়াছেন। কেবল জর্ম্মণীতে এখনও এই বিদ্যার কিঞ্চিৎ আলোচনা চলিতেছে। হিন্দুর ধারণা ও বিশ্বাস স্বতন্ত্র। হিন্দু মনে করেন, যে পথে যাইলে আমরা বিশ্বপ্রহেলিকার রহস্য উদ্ভিন্ন করিতে পারিব, তাহাই আমাদের গন্তব্যপথ। উহাই মুক্তির পথ। মায়ার প্রভাক ক্ষয় করিতে হইলে ঐ পথেই যাওয়া আবশ্যক। কিন্তু যাই কি করিয়া ? পথে রজ্জ্ব দেখিলেই যে সর্পভ্রমে । পিছাইয়া আসিতে হয়। মনের এই ধন্দ যে সহজে ঘুচে না। এই ভ্রান্তি অ কাটে না। হিন্দু বলেন, এই ভ্রান্তি কাটাইবার দুইটি পথ আছে;—একটি আপ্তবাক্যে বিশ্বাস, আর একটি শক্তি-সাধনা। যে ব্যক্তির রজ্জতে সর্পভ্রম হইয়াছে, তাহাকে যদি কোনও মনীষাসম্পন্ন মহাত্মা বুঝাইয়া দেন যে, সে যাহা দেখিয়াছে তাহা সৰ্প নহে, রজ্জ তাহা হইলে তাহার সেই ভ্রমের অপনোদন সম্ভবে। দ্বিতীয়তঃ সাধনার দ্বারা এই ভ্রম নিরস্ত করা যায়। পথে পতিত রজ্জাকে সৰ্প বলিয়া ভ্রম জন্মিলে পলায়ন না করিয়া যদি সাহসভরে উহার স্বরূপ-নির্ণয়ে অগ্রসর হওয়া যায়, তাহা হইলে সে ভ্রম ঘুচিবেই। ঘুচিবে। এ ক্ষেত্রে কর্ম্মের দ্বারা অজ্ঞানকে ছিন্ন করিতে হইবে। এ স্থলে একজন উপদেষ্টার"আবশ্যক। মনে করুন, আমি সৰ্প চিনি, রজ চিনি না। ’ আমি যদি কোমর বাধিয়া পথিমধ্যে পতিত রজ্জর স্বরূপনির্ণয়ে অগ্রসর হই, তাহা হইলে আমি উহা সৰ্প নহে-ইহা বুঝিব সত্য, কিন্তু উহা যে রজ্জত-তাহা বুঝিব না। কারণ, রাজু কাহাকে বলে, তাহা আমি জানি না। কোন কোন ৷