&@ob * আর্য্যবর্ত্ত । ৩য় বর্ষ-৪র্থ সংখ্যা । আসিয়াছিলেন । সময়ে সময়ে মনে ইইত, তাহাকে আসিতে লিখিবেন । কিন্তু তাহাকে আসিতে হইলে, ভঁাহার পরিবারকে নিতান্ত নিঃসহায় অবস্থায় ফেলিয়া আসিতে হয়। রামশারণ তাহা ইচ্ছা করিতেন না । রোগমুক্তিসম্বন্ধে তাহার বিশ্বাস যদি এত শিথিল না হইত, তাহা হইলে হয়ত তাহাকে সংবাদ দিতেন, কিন্তু বহুদিন পর্য্যন্ত জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে যে সংগ্রাম চলিয়াছিল, তাহাতে তিনি মৃত্যুরই জয় অবশ্য স্তাবী, মনে করিয়াছিলেন, কাষেই তাহার এই অনিশ্চিত পরিণামের সহিত আর কাহাকেও জড়িত করিতে ইচ্ছা করেন নাই। কখন কখন ইহাও তাহার মনে হইত যে, আরোগ্যলাভ করিয়া হঠাৎ একদিন তিনি গৃহে উপস্থিত হইবেন, আর তঁহার প্রাণীপেক্ষা প্রিয়তম। কন্যাকে বক্ষে ধারণ করিবেন ; আর কণ্ঠবিলগ্নি হৰ্ষবিহবলা পত্নীর সন্তাৰণের সহিত বালিকার সেহোচ্ছাসপুর্ণ অপরিস্ফুট বাক্যামৃত উপভোগ করিাবেন। সে আনন্দের দৃশ্য কল্পনা করিতে করিতে র্তাহার শরীর কণ্টকিত হাইতি, চক্ষু বিস্ফোরিত হইত। পরীক্ষণেই পারিপার্থিক অবস্থা সুখের কল্পনাব্রাজ্য হইতে র্তাহাকে বলপূর্বক টানিয়া আনিত। তিনি যন্ত্রণায় অধীর হইয়া উঠিতেন । রামশরণের ধৈর্য্যচুতি ঘটিবার উপক্রম হইল। সেই একই ঘর, একই শয্যা, একই শয্যার সারি। রোগীর সকরুণ আর্ত্তনাদ, মুমূর্ষুর মর্ম্মস্পর্শী কাতরতা, শুশ্রুষাকারিণীদিগের অতর্কিত পরিক্রমণ, শববাহকদিগের সতর্ক পদবিক্ষেপ সেই একই ভাবে চলিতে লাগিল। তাহার বিরাম নাই ; অথবা পরিবর্তন নাই ৷ প্রতি দিনের সেই অধীর প্রতীক্ষা-ডাক্তারের জন্য প্রতীক্ষা, আহারের প্রতীক্ষা, ঔষধের প্রতীক্ষা-দীর্ঘ দিনগুলিকে আরও দীর্ঘ করিয়া তুলিত। অন্য রোগিগণের আত্মীয়স্বজন অবধারিত সময়ে আসিয়া তাহাদিগকে দেখিয়া যাইত। রামশরণের অশ্রু গণ্ডস্থল প্লাবিত করিয়া বাহিত । জগতে তাহার এমন কেহ ছিল না যে, এই মরণাপথে সাত্মনাৰাক্যে তঁহার শেষমূহুর্ত্ত কয়েকটি স্নিগ্ধ করিয়া দিতে পারে। এই চিন্তা তাহাকে পাগল করিয়া তুলিত। ষে সময় ভাক্তার আসিতেন, সেই মুহুর্ত্ত গুলি রাষশরণের অত্যন্ত শাস্তিপ্রদ বলিয়া বোধ হইত। তিনি প্রত্যহই আশ্বাস দিতেন, প্রত্যহই অবসাদক্লিষ্ট রোগষণাকাতর। প্রাণে উৎসাহের অমিয়ব্যারি সিঞ্চন করিতেন ; আসিয়াই
