পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

、! আর্য্যাবর্ত ১ম বর্ধ-২য় সংখ্যা । পর্ব্বতের সাহুদেশে সমস্ত স্থান হইতেই এই নিষ্ঠার বিদারণের শব্দ আসিতে লগিল ; আমরা জানিতে পারিলাম যে, উপত্যকার সর্বস্থানেই পাষাণের উপর অত্যাচার হইতেছে। এইরূপে সন্ধ্যাগমের পূর্বেই পৰ্বতসানুর আকার অন্যরূপ হইয়া গেল। অন্ধকারের আগমনের সহিত চতুর্দিকে অগ্নি প্রজালিত হইতে লাগিল, বনভূমি বহুকাল পরে মনুষ্য কর্তৃক প্রজালিত অগ্নিতে উজ্জল হইয়া উঠিল। পরে জানিয়াছিলাম, স্তুপনির্ম্মাণের জন্য নগর হইতে সহস্ৰাধিক ব্যক্তি পাষাণ ছেদন করিতে পর্ব্বতের নিকটে আসিয়াছিল। তােহাৱা সমস্ত দিন পাষাণ ছেদন করিয়া পর্ব্বতের সানুদেশে রাত্রিযাপন করিত। সুর্য্যোদয় হইতে সন্ধ্যার সমাগম পর্য্যন্ত পাষাণ ছেদনের শব্দে ও সেই শব্দের প্রতিধ্বনিতে শৈলশ্রেণী কম্পিত হইত । শ্বাপদসঙ্কুল বনাবৃত সানু দশ জীবাশূন্য হইয়া উঠিল। মানবগণ মাসদ্বয় পর্ব্বতপার্শ্ব হইতে শিলা ছেদনে ব্যাপৃত ছিল। শিলা ছেদন শেষ হইলে নগর হইতে শত শত গোষন আসিয়া উপস্থিত হইল, গোষান যাতায়াতের জন্য উপত্যকা হইতে নিম্নভূমি পর্যন্ত পথ প্রশস্ত করা হইয়াছিল। দলে দলে বৃহৎকায় হস্তিগণ পর্বতনিয়ে আনীত হইল ও দিনের পর দিন হস্তিগণ বৃহৎ পাষাণখণ্ডসমূহ শুণ্ডে উঠাইয়া গোষানে স্থাপন করিতে লাগিল। দ্বিসহস্ৰ বৎসর পূর্বে হীনবল মানব জাতি কিরূপে এই গুরুভার পাষাণারাশি পর্ব্বতশ্রেণী হইতে বহুদূৱবর্ত্তী নগরের সান্নিধ্যে লইয়া গিয়াছিল, বাষ্পীয় যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত গুরুভার পাষাণ কিরূপে ভূমি হইতে উত্তোলিত হইয়াছিল, তাহা ভাবিয়া তোমরা বিস্মিত হও, কিন্তু আমি তখন আশ্চর্য্যজনক বিশেষ কিছুই দেখি নাই। আমি কিসে বিস্ময় বোধ করি শুনিবে ? আমার বিস্ময় বোধ হইয়াছিল গোশকট দেখিয়া, গোশকটের চক্র দেখিয়া, চক্রেরা প্রবর্ত্তন দেখিয়া । আমি ভাবিয়াছিলাম, কাষ্ঠনির্ম্মিত ক্ষুদ্র চক্র গুরুভার পাষাণের ভার বহন করিতে সমর্থ হইবে না, ভার বহনেও যদি সমর্থ হয় শকট চলিতে সমর্থ হইবে না, নিশ্চয়ই কোন না। কোন বিপদ ঘটবে। কিন্তু সামান্য চেষ্টাতেই শকট চলিল, চক্র প্রবর্ত্তিত হইতে লাগিল, ক্রমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে পথ অতিবাহিত হইতে লাগিল। সেরূপ গোশকট তোমরা এখন আর ব্যবহার কর না, দুই একজন মাত্র, তাহার, পাষাণে খোদিত চিত্র দেখিয়া থাকিবে। তাহা বর্ত্তমানকালে প্রচলিত গোশকটের ন্যায় নহে। বর্ত্তমানের গোশকট দ্বিচক্র, কিন্তু সেগুলি চারি বা ততোধিক চক্রের উপরে স্থাপিত হইত। রাথচক্র কোন স্থানে ভূমিতে প্রবেশ করিলে বা পথের কোন স্থান কর্দমাক্ত থাকিলে হস্তিকৃদ আসিয়া সাহায্য করিত, শুণ্ডে রথচক্র মুক্ত করিত, কখন বা ভাৱবাহী গোসমূহকে সাহায্য কবিত। এইরূপে গোশকটে সহস্ৰাধিক শিলাখাও নূতন