পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8 আশুতোষ-স্মৃতিকথা খৃষ্টাব্দে তিনি এণ্টান্স পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অধিকার করিয়া ২০২২ টাকার বৃত্তি পাইয়াছিলেন । re এফএ পরীক্ষার সময় । গঙ্গাপ্রসাদ তাহার পুত্রের স্বাস্থ্যের দিকে বেশী মনোযোগী হইয়াছিলেন। কিন্তু তিনি তাহকে বেশী রাত্রি জাগিয়া পড়িতে নিষেধ করা সত্ত্বেও আশুতোষ পিতাকে ভুলাইয়। রাখিয়া তিনি নিদ্রিত হইলে প্রদীপ জ্বালাইয়া পড়িতে বসিতেন এবং এইভাবে নৈশ জাগরণের রীতি অনেক দিন চালাইয়াছিলেন ; অতুলবাবুর পুস্তক হইতে আমরা একথা জানিতে পাই । মহেন্দ্রবাবু লিখিয়াছেন—“তিনি রোজই রাত্রি একটার আগে ঘুমাইতেন না। এবং বিদ্যানুরাগ আপন অধিকার-সীমা অতিক্রম করিল। দ্বিতীয় বর্ষে ( দ্বিতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে পড়িবার সময় ) তাহার শিরঃপীড়া হইল,--অগত্য মাচ্চ মাসে তঁহাকে কলেজ হইতে ছুটি লাইতে হইল।” ১৮৮১ খৃষ্টাব্দের মাচ্চ এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত তাহাকে নিজের কাছে রাখিয়া গঙ্গাপ্রসাদ যথোচিত যত্নে স্বয়ং চিকিৎসা করিতে লাগিলেন, কিন্তু রোগের প্রকোপ কমিল না, বরং বাড়িয়াই চলিল । বাধা হইয়া আশুতোষকে তিনি আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য গাজিপুরে পাঠাইলেন। সেখানে গঙ্গাপ্রসাদের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ডিষ্টি ক্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন ; আশুতোষ তাহারই কাছে থাকিয়া চিকিৎসিত হইতে লাগিলেন। গাজিপুর সহরকে একখানি গোলাপের বাগান বলিলেও অত্যুক্তি হয় না ; আশুবাবু সেই গোলাপের সুরভি ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করিয়া পুলকিত হইলেন। অতুল ঘটক এই উপলক্ষে একটি কৌতুকাবহ গল্প লিখিয়াছেন। তিনি যখন আশুতোষের নিজের মুখে সকল কথা শুনিয়া তাহার চরিতাখানের “নোট’ লইয়াছিলেন, তখন গল্পটি যে সন্তা, তৎসম্বন্ধে আমাদের সন্দিহান হইবার কোন কারণ নাই । তিনি লিখিয়াছেন-“একটি বালক-নিক্ষিপ্ত লোষ্ট্রাঘাতে ক্ষিপ্ত হইয়া ইন্দারার পাশ্বে উপবিষ্ট আশুতোষকে বহুসংখ্যক ভীমরুল আক্রমণ করে, এবং তঁহার গ্রী লাদেশে এরূপ ভয়ানকভাবে দংশন করে যে, তিনি দুই দিন অজ্ঞানাবস্থায় পড়িয়াছিলেন । কিন্তু আশ্চর্যোর বিষয় এই যে, আশুতোষের জ্ঞান হওয়ার পর কিছুকালের জন্য তঁহার নিদারুণ মস্তিষ্ক-পীড়ার সম্পূর্ণ উপশম হইয়া গেল। এই অলৌকিক ঘটনা শ্রবণ করিয়া ডাক্তার গঙ্গাপ্রসাদ প্রভৃতি বিজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলিলেন, “ভীমরুলের বিষ ব্যাধির বিষ নষ্ট করিয়াছে।” ”