পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औदन-थडाऊ বৃত্তি-পদকাদি ছিল তঁহার বাহা বিভূতি মাত্র। যেমন ভগবান কাহাকেও সাত ফিট দীর্ঘ করেন,-ৰ্তাহার মাথা অপর সকলের মাথা হইতে উচ্চে থাকিয়া নিজের শ্রেষ্ঠত্ব আপনা। আপনি প্রতিপন্ন করে, তাহার পরিচ্ছদ ও ভূষণাদি অঙ্গের সৌষ্ঠব সাধন করিলেও তঁহার উচ্চ শিরই তাহার দৈহিক শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র প্রতিপাদক,-সেইরূপই ভগবান তাহাকে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধি, শাসন-ক্ষমতা, স্বশক্তিতে বিশ্বাস, স্বীয় সিদ্ধি-সম্বন্ধে আটল ধারণা, জীবন-পাণ অধ্যবসায়, এবং অনন্যসাধারণ কর্ম্ম-দক্ষতা ও সর্ব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি প্রভৃতি মহাগুণ দিয়াছিলেন। তিনি যে বিষয়ের খুটিনাটি জানিতেন না, সে বিষয়েও তঁহার এতটা দূরদৃষ্টি ও গঠনমূলক পরিকল্পনার শক্তি ছিল যে, যাহারা সেই বিষয়ের আচার্য্য এবং আজীবন সেই কর্ম্মের কর্ম্মী ছিলেন, তাহারাও তঁহাদের স্বীয় স্বীয় ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ সমস্যা ও কার্য পদ্ধতি তাহার মত সম্পূর্ণভাবে নির্ণয় করিতে পারিতেন না । আশুতোষ অতি অল্প সময়ের মধ্যে সেই সকল বিষয়ের সমস্ত সমস্যা সমাধান করিয়া কর্ম্ম-তালিকা প্রস্তুত করিয়া ফেলিতেন। দাড়ীর বৈঠা বাহিয়া যায়, কিন্তু একজন মাঝি থাকা চাই,-সে। বৈঠা বাহিতে জানুক বা না জানুক, নৌকা কোন দিকে চালাইতে হইবে, এবং নদীর বেগ কোন দিকে, তাহা দাড়ীদের অপেক্ষা সে বেশী বুঝে,-আশুবাবু ছিলেন সেইরূপ একজন মাঝি। অপরাপর লোকের কর্ম্মক্ষেত্রে সুদক্ষ দাড়ী-বৈঠা-পরিচালক, কিন্তু মাঝি নহে। দাড়ী ছাড়াও শুধু মাঝির হাতের কায়দায় কিংবা যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে নৌকা চলিতে পারে, কিন্তু মাঝি বা কর্ণধার না থাকিলে নৌকা অচল হয়। যেখানে একটা নির্দিষ্ট ও চিরাচরিত কর্ম্মতালিকা আছে, সেখানে ক্ষেপণী-ধারীরা একরূপে নিত্য-নৈমিত্তিক কার্য্য নির্বাহ করিতে পারে, যেহেতু একটি সীমাবদ্ধ প্রণালীর ভিতর দিয়া চলা-ফেরায় তাহারা অভ্যস্ত । কিন্তু আশুতোষের মত লোক যে যে প্রতিষ্ঠানে গিয়াছেন, সেখানে এত মৌলিক বিষয়ের আমদানি করিয়াছেন যে, তাঁহাকে ছাড়া সেই সেই প্রতিষ্ঠানের কর্ম্মীদের গত্যন্তর ছিল না,-সেখানে তিনি অপরিহার্য্য হইয়া পড়িতেন। তিনি অবশ্য নানা বিষয়ে বুৎপন্ন ছিলেন। মৌলিকভাবে গণিত-চৰ্চার জন্য তিনি জার্ম্মাণ ও ফরাসী ভাষা শিখিয়াছিলেন এবং এই বিষয়টিতে র্তাহার প্রতিভা ও গবেষণা-শক্তি অদ্ভুত ছিল ; তিনি মধুসূদন স্মৃতিরত্ন ও গয়ারাম স্মৃতিকণ্ঠ মহাশয়দের নিকট রীতিমত সংস্কৃত