পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V · সুলেখক শ্রীযুক্ত যতীন্দ্র সেন এই পুস্তকের প্রতিলিপি প্রস্তুত করিয়া এবং স্থানে স্থানে পরিবর্তন ও সংশোধন-সম্বন্ধে মতামতদ্বারা আমাকে বাধিত করিয়াছেন । আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্ম্ম করার সময় পল্লীগীতিক-সংগ্রহসম্বন্ধে তিনি আমাকে সাহায্য করিয়াছিলেন এবং নিঃস্বার্থভাবে পরিশ্রম করিয়া এই পুস্তকের শব্দ-সূচী প্রস্তুত করিয়া দিয়াছেন। এই পুস্তকের ছাপা শেষ হ খুয়ার পরে শ্রীযুক্ত রয়াপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নিকট আশুতোষ ও তাহার পিতা ও পিতৃ পাদিগের সম্বন্ধে কতকগুলি নূতন তত্ত্ব অবগত হইলাম, তাহার কিছু কিছু এখানে লিপিবদ্ধ করিতেছি। গ্রন্থভাগে লিখিত হইয়াছে, গঙ্গাপ্রসাদ ও তঁহার ভ্রাতৃগণ শৈশবে দারিদ্র্যজনিত অনেক কষ্ট ভোগ করিয়াছিলেন। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা দুৰ্গাপ্রসাদ ইহাদিগকে, পক্ষী যেরূপ শাবকগুলিকে স্বীয় পক্ষপুটে রক্ষা করিয়া পালন করে, তেমনই যত্নে লালন পালন করিয়াছিলেন। ভ্রাতাদের বৃত্তি ও স্বীয় ক্ষুদ্র আয় হইতে তিনি ইহাদিগের জীবিকা-নির্বাহ ও শিক্ষার ব্যয় অতি কষ্টে বহন করিতেন। গঙ্গাপ্রসাদ যখন এণ্টান্স ক্লাসে পড়িতেন, তখন রাত্রে পাঠের জন্য একটু রোড়ীর তেল সংগ্রহ করিবার মত সংস্থান ও সব সময়ে হইত না । বিদ্যাসাগর মহাশয় লিখিয়াছেন,- ডুবাল নামক জনৈক ব্যক্তি শিশুকালে গাছের শুকনা পাতা জ্বালিয়া পাঠ্য পুস্তক পড়িয়া শেষে লব্ধ-প্রতিষ্ঠ হইয়াছিলেন । গঙ্গা প্রসাদ রাস্তার লাইট-পোষ্টের নীচে দাড়াইয়া পড়া মুখস্থ করিতেন। তৎকালে এণ্টান্স পরীক্ষার ‘ফি’ ১০২ টাকা ছিল। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা দুর্গাপ্রসাদ বহু কষ্টে এই ১০২ টাকা সংগ্রহ করিয়া পাঠাইলেন ; “ফি’ দাখিল করিবার সেই সর্ব্ব-শেষ দিন ; তাড়াতাড়ি গঙ্গাপ্রসাদ উহা জমা দেওয়ার জন্য রাস্তায় যাইতেছিলেন, পথে পকেট-কাটা চোর সেই টকা লইয়া অদৃশ্য হইল। গঙ্গাপ্রসাদ পৃথিবী অন্ধকার দেখিলেন, আত্মীয়-স্বজন অনেকের বাড়ী বাড়ী ঘুরিলেন, একটি পয়সাও জুটিল না। আশুতোষ যখন পিতার এই অবস্থার কথা বলিতেন, তখন আশ্রতে ऊँश्त क% রুদ্ধ হইত। এত বৎসরের পরিশ্রম-ও সমস্ত আশা-ভরসা ১০২টি টাকার জন্য মাটি হইতে উদ্যত। অশুতোষ দুঃস্থ ছাত্রদের প্রতি যে এত দরদী। হইয়াছিলেন, তাহা তাহার নিজের অন্তঃকরণ দিয়া ছাত্রদের অবস্থা হৃদয়ঙ্গম করার ফলে। বহু ছাত্রের ‘ফি' তিনি নিজে দিয়াছেন। এই অনুভূতি ও সহৃদয়ত। তাহার