পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উদয়পুরমন্দিরের ব্রাহ্মণ।
২২৭

 মন্দিরের উপরে উঠিবার পূর্ব্ব্বে প্রত্যেকেই, অবনত হইয়া সোপানের নিম্নতম ধাপটি চুম্বন করিতেছে এবং উপরে উঠিয়া পবিত্র নন্দিরচ্ছায়া হইতে বাহির হইবার পূর্ব্ব্বেও, দ্বারদেশে ফিরিয়া আসিয়া দ্বারদেশের মাটি চুম্বন করিতেছে-প্রণাম করিতেছে। দুর্ভিক্ষের প্রেতমূর্ত্তিরাও ক্রমশ আসিয়া জমা হইতেছে এবং উৎসবসাজে-সজ্জিত জনতার গতিরোধ করিতেছে—উহাদের শুষ্ক হস্তের দ্বারা যাত্রীদিগকে আটুকাইতেছে; মলমলের অবগুণ্ঠনবস্ত্রের মধ্যে অঙ্গুলী প্রবিষ্ট করিয়া দিতেছে; ভিক্ষালাভের উদ্দেশে, বানবের ন্যায় ক্ষিপ্রভাবে বিবিধ চেষ্টা, ও অসংযতভাবে,অনায়ভাবে নানাপ্রকার অঙ্গচালনা করিতেছে।

 তাঁহার পর, প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় যেরূপ হইয়া থাকে—হঠাৎ একটা বাতাস উঠিল; কিন্তু তাহাতে তপ্তনগর শীতল হইল না। ধূলার কুজ্ঞাটিকার মধ্যে—পীতাভ, বিষঃ ও ম্লান সূর্য অস্তমিত হইল।

 এ সমস্ত সত্ত্বেও, রাস্তায় উৎসবঘটা সমস্তরাত্রি সমান চলিতে লাগিল। সুগন্ধি রঙিনচূর্ণ মুঠামুটা উঠাইয়া লোকেরা পরস্পরের উপর নিক্ষেপ কবিতে লাগিল;—উহা লোকের মুখে ও পরিচ্ছদে লাগিয়া রহিল। এইরূপ ঝটাপটি করিয়া যখন উহারা বাহির হইল, তখন দেখা গেল, উহাদের মুখের অর্ধভাগ নীল কিংবা বেগুনী কিংবা লাল রঙে রঞ্জিত;উহাদের শুভ্র পরিচ্ছদে উজ্জ্বল-রং-মাখানো আহস্ত অঙ্কিত হইয়াছে;গোলাপী কিংবা হলদে কিংবা সবুজ-রং-মাখানো পাচ-আঙুলের দাগ পড়িয়াছে।


উদয়পুরের সুরম্য বনভূমি।

 যাত্রাপথের ধারে, একটি রমণীয় বনে, গিরিপাদমূলে দর্পণবৎ প্রশান্ত সরোবরের সম্মুখস্থ একটি কুটীরে, তিনজন সন্ন্যাসীর বাস। ইহারা যুবা