পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

মনে পড়িল। মনে হইল, যেন সেই অতীতযুগে কোন য়ুরোপীয় “প্রিন্‌স্‌", কিংবা “ডিউক” অশ্বারোহী অনুচরবর্গ ও “ব্যারন্‌গণ সমভিব্যাহারে, সুন্দর শরৎসায়াহ্লো, মৃগয়া হইতে প্রত্যাবর্তন করিতেছেন।•••


রাজপুতরাজার গৃহে।

 আমাকে পান্থশালায় লইয়া যাইবার জন্য উদয়পুর-মহারাজার আদেশক্রমে একটা “ল্যাণ্ডৌ” গাড়ি আসিয়া হাজির হইল। অশ্বযুগল নিখুঁৎ সাজসজ্জায় সজ্জিত। বালুকাময় ঢালুভূমির উপর দিয়া ঘোড়ারা ছুটিয়া চলিল। ঢালুভূমির ধারে-ধারে ক্ষুদ্র স্তম্ভশ্রেণী ও গোলাপীরঙের একটা প্রকাণ্ড অট্টালিকা। একটি সরোবরের তীরে-শৈলভূমির উপর প্রাসাদ-সৌধাবলী অর্ধচন্দ্রাকারে সজ্জিত। পুষ্পপল্লবের মধ্য হইতে কতকগুলা পাথরের হাতী ইতস্তত দেখা যাইতেছে। এই ঢালু-ভূমির উপর দিয়া বলিষ্ঠ অশ্বযুগল বেগভরে অবলীলাক্রমে উঠিতেছে, আমি বেশ অনুভব করিতেছি। শাই, আমাদের দৃষ্টিক্ষেত্র প্রসারিত হইল। শীঘ্নই, সেই সুরম্য বনভূমি, সেই নীল সরোবর, সেই-সব ছোট-ছোট দ্বীপ, সেই-সব দ্বীপস্থ প্রাসাদ আমার নেত্রসমক্ষে প্রসারিত হইল। আমরা যেমন উপরে উঠিতেছি—চতুর্দিকের পর্বতপ্রাচীরটিও আমাদের সঙ্গে সঙ্গেই যেন উঠিতেছে, এইরূপ মনে হইতে লাগিল। উদয়পুরের সব জিনিষেরই পশ্চাতে, এই পর্ব্বত-অরণ্যের রহস্যময় চিত্রপটটি চিরবিদ্যমান।

 এই মহারাজা মেওয়ারদেশের অধিপতি। ইহারই সহিত আজ আমি সাক্ষাৎ করিতে যাইতেছি। রাজস্থানে যত রাজবংশ আছে, তন্মধ্যে ইহারই বংশ সর্ব্বাপেক্ষ। প্রাচীন এবং মানসম্ভ্রমেও ইনি সর্ব্বাপেক্ষা