পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮৬
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ।

বুদ্ধপ্রবর্ত্তিত সন্ন্যাস অবলম্বন করেন, এবং এক্ষণে থিওসফিষ্টসভার সভাপতি হইয়াছেন; অন্যটি একজন হিন্দু;—আমাদের য়ুরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ উপাধি অর্জ্জন করিয়া ভারতে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়াছেন এবং এক্ষণে ইনি আমাদের পাশ্চাত্যদর্শনাদি কতকটা অবজ্ঞার চক্ষে দেখিয়া থাকেন।

 আমি উত্তর করিলাম,—“তুমি বলিতেছ, আমাদের অন্তরস্থ কোনএক পদার্থ,—আমাদের ক্ষণস্থায়ী ব্যক্তিত্বের একটু অংশ,—কিয়ৎকালের জন্য মৃত্যুর আঘাতকে প্রতিরোধ করে, তাহার অকাট্য প্রমাণ তোমরা পাইয়াছ। অন্তত এই অকাট্য প্রমাণটি কি, তুমি আমাকে দেখাইতে পার?”...

 তিনি বলিলেন,—“যুক্তির দ্বারা আমরা তাহা সপ্রমাণ করিব; কিন্তু চাক্ষুষ প্রমাণ যদি চাহ, তাহা আমরা দিতে পারিব না...যাহাদিগকে লোকে অযথারূপে মৃত বলে—(কেন না, আসলে কেহই মরে না) সেই মৃত ব্যক্তিকে দেখিবার জন্য বিশেষ ইন্দ্রিয় আবশ্যক, বিশেষ অবস্থা ও বিশেষ মানসিক প্রকৃতি আবশ্যক। কিন্তু আমাদের কথায় তুমি বিশ্বাসস্থাপন করিতে পার; আমরা দেখিয়াছি এবং আমাদের ন্যায় বিশ্বাসযোগ্য আরো অন্য লোকে মৃতব্যক্তিদিগের অপচ্ছায়া দেখিয়াছে এবং তাহার সমস্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়াছে। দেখ, এই পুস্তকাগারের এই সকল পুস্তকে ঐ সমস্ত বিবরণ পাওয়া যায়—কাল যখন তুমি আসিয়া আমাদিগের সঙ্গে বাস করিবে, তখন এই সকল পুস্তক পাঠ করিও।”...

 আমি তবে কেন এত কষ্ট করিয়া ভারতে আসিলাম,—যে ভারত সমস্ত মানবীয় ধর্ম্মমতের পুরাতন আদিমনিবাস—যদি এই পুস্তকাগারের পুস্তকেই সমস্ত কথা জানা যাইতে পারে; মন্দির সমূহের মধ্যে,—ব্রাহ্মণ্যধর্ম্ম পৌত্তলিকতার অন্ধকারে সমাচ্ছন্ন; আর এখানে,—শাক্যমুনিকৃত এক প্রকার প্রত্যক্ষবাদের (Positivism) নব-সংস্করণ এবং সমস্ত পৃথিবী হইতে সংগৃহীত প্রেতবাদের কতকগুলা গ্রন্থ দেখা যাইতেছে।…