ভাবনা হইল। আমার সম্বলের মধ্যে ছিল—পরিধানে এক খানি ধুতি, গায়ে একটী পিরাণ, একখানি চাদর এবং পায়ে একজোড়া জুতা। আমি জুতা খুলিলাম, পিরাণ খুলিলাম, চাদর পরিধান করিলাম; এবং কাপড় প্রভৃতি হস্তে লইয়া, অক্লেশে নদী পার হইলাম। অপর পারে গমন করিয়া কাপড়, জুতা প্রভৃতি পরিলাম। একটু অসুবিধার ভিতর হইল—কেবল ভিজা চাদর।
সাহেবদিগের দুঃখের কথা আর কি বলিব? তাঁহারা প্রথমে নৌকার চেষ্টা করিলেন—পাইলেন না। পরে অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া, অনন্যোপায় হইয়া আপন আপন বুট-মোজ পা হইতে খসাইলেন, কামিজ কোট খুলিলেন। পরিশেষে অবশিষ্ট পেণ্টুলান খুলিয়া দিগম্বর-মূর্ত্তি ধারণপূর্ব্বক জলে পড়িলেন। অনেকদূর হাঁটু ও তাহার কম জল ভাঙ্গিয়া যাইতে হইল। সাহেবদিগের অবস্থা দেখিয়া ঘাটে লোক জমিয়া গেল। পুরুষগণ হাসিতে লাগিল; স্ত্রীলোকগণ মুখে কাপড় দিয়া গালি দিতে দিতে পলাইল। সাহেবদিগের পরিধেয় সকল পূর্ব্বতীরে বালুকার উপরই পড়িয়া রহিল, আমি দেখিয়াও দেখিলাম না। সাহেবগণ নদী পার হইয়া অপর পারে গমন করিয়া, পোষাক পরিধান করিতে গিয়া দেখেন, উহা অন্য পারে পড়িয়া রহিয়াছে—কেহ তাঁহাদিগের কাপড় প্রভৃতি আনয়ন করে নাই। এই অবস্থায় ইংরাজের মেজাজ চটিয়া গেল। হাবিৎ সাহেব আমাকে কহিলেন, “কেহই আমাদিগের কাপড় আনে নাই—আমরা কি পরিব?” হাবিতের কথা শুনিয়া আমি একটু হাসিলাম; হাসিয়া কহিলাম,—