—ভালো করে মনে করুন।
—না দারোগা মশাই।
যাবার সময় দারোগা রাজারাম রায়কে ডেকে বলে গেল—দেওয়ানজি, কবিরাজ বুড়ো বড় তেঁদড়। ওকে হাত করার চেষ্টা করতে হবে। ডাবের জল খাওয়ান বেশ করে।
রামকানাইকে নীলকুঠিতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হোল পাইক দিয়ে। প্রসন্ন চক্রবর্তী আমীন বললে—কবিরাজ মশাই—বড় সায়েব বাহাদুর বলেচেন আপনাকে খুশী করে দেবেন। শুধু কি চান বলুন—বড় সন্তুষ্ট হয়েচেন আপনার ওপর।
—আমি আবার কি চাইবো? গরিব বামুন, আমীনমশাই। যা দেন তিনি।
—তবুও বলুন কি আপনার—মানে ধরুন টাকাকড়ি কি ধান—
ধান দিলে খুব ভালো হয়।
—তাই আমি বলচি দেওয়ানজির কাছে—
রামকানাই চক্রবর্তীকে তারপর নিয়ে যাওয়া হোল ছোটসাহেবের খাস কামরায়। রামকানাই গরীব ব্যক্তি, সাহেবসুবোর আবহাওয়ায় কখনো আসেন নি, কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ঢুকলেন। ছোটসাহেব পাইপ মুখে বসে ছিল। কড়া সুরে বললে—ইদিকি এসো—
—আজ্ঞে সায়েব মশাই—নমস্কার হই।
—তুমি কি কর?
—আজ্ঞে, কবিরাজি করি।
—বেশ। কুঠিতে কবিরাজি করবে?
—আজ্ঞে কার কবিরাজি সায়েব মশাই?
—আমাদের।
—সে আপনাদের অভিরুচি। যা বলবেন, তাই করবো বই কি।
—তাই করবা?
আজ্ঞে কেন করবো না?