স্ত্রীতে মিলে এমন সুন্দরভাবে ওরা পরিবেশন করলে যে সকলেই সমানভাবে সর জিনিস খেতে পেলে—নয়তো এসব ক্ষেত্রে পাড়াগাঁয়ে সাধারণতঃ যার বাড়ি, তার নিভৃত কোণের হাঁড়ি কলসীর মধ্যে অর্ধেক ভালো জিনিস গিয়ে ঢোকে সকলের অলক্ষিতে।
ফণি চক্কত্তি বললেন বেশ মঠ করেচে কড়াপাকের। কেষ্ট ময়রা কারিগর ভালো-ওহে ভবানী, আর দুখানা মঠ এ পাতে দিও
রূপচাঁদ মুখুয্যে বললেন—তবে ওই সঙ্গে আমাকেও একখানা-
তিলু হেসে বললে- লজ্জা করচেন কেন কাকা~~ আপনাকে কখানা দেবো বলুন না? দু’খানা না তিনখানা?
—না মা, দু'খানা দাও। বেশ খেতে হয়েছে—এর কাছে আর খাঁড় গুড় লাগে?
—আর একখানা?
—না মা, না মা-আঃ-আচ্ছা দাও না হয় ছাড়বে না যখন তুমি!
রূপচাঁদ মুখুয্যে দেখলেন সুির সুগৌর সুপুষ্ট বাউটি ঘুরানো হাতখানি তাঁর পাতে আরও দু’খানা কড়াপাকের কঁচা সোনার রংয়ের মঠ ফেলে দিলে। অনেক দিন গরীব রূপচাদ মুখুয্যে এমন চমৎকার ফলার করেন নি, এমন মঠ দিয়ে মেখে।
এই মঠের কথা মনে ছিল রূপচাঁদ মুখুয্যের, গয়া যাবার পথে গ্যাং ট্যাং রোডের ওপর বারকাটা নামক অরণ্য-পর্ব -সঙ্কুল জায়গায় বড় বিপদের মধ্যে পড়ে একটা গাছের তলায় ওদের ছোট্ট দলটি আশ্রয় নিয়েছিল অন্ধকার রাত্রে —ডাকাতেরা তাদের চারিধার থেকে ঘিরে ফেলে সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছিল, ভাগ্যে তাঁদের বড় দলটি আগে চলে গিয়ে এক সরকারী চটিতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল তাই রক্ষে, দলের টাকাকড়ি সব ছিল সেই বড় দলের কাছে। কেন যে সে রাত্রে অন্ধকার মাঠের আর বনপাহাড়ের নির্জন, ভীষণ রূপের দিকে চেয়ে নিরীহ রূপচাঁদ মুখুজ্যের মনে হঠাৎ তিলুর বাউটি-ঘোরানো হতে মঠ পরিবেশনের
১২৭