কলকেতার মাথা ঘষা
মেদিনীপুরের চিরুনি
এমন খোঁপা বেঁধে দেবো
চাঁপাফুলের গাঁথুনি
আমার নাম সরোবালা
গলায় দেবো ফুলের মালা-
বিলু চোখ পাকিয়ে হেসে বললে—কি বিধুদিদি আমার নামে বুঝি ছড়া বানানো হয়েছে? তোমায় দেখাচ্ছি মজা-বলে,
চালতে গাছে ভোমরার বাসা
সব কোণ নেই তার এক কোণঠাসা –
তোমারে আমি–আচ্ছা, একটা গান কর না বিধুদিদি? মাইরি নিধুবাবুর টপ্পা একখানা গাও শুনি-
বিধু হাত-পা নেড়ে ঘুরে ঘুরে গাইতে লাগলো-
ভালোবাসা কি কথার কথা সই, মন যার সনে গাঁথা।
কাইলে তরুবর আঁচে কি জড়িতা লতা।
মন যার সনে গাঁথা।
ও পাড়ার একটি অল্পবয়সী লাজুক বৌকে সবাই বললে—একটা শ্যামা- বিষয়ক গান গাইতে। বৌটি ভজগোবিন্দ বাঁড়ুয্যের পুত্রবধূ, কামদেবপুরের রত্নেশ্বর গাঙ্গুলীর তৃতীয় কন্যা, নাম নিস্তারিণী। রত্নেশ্বর গাঙ্গুলী এদিকের মধ্যে একজন ভালো ডুগি-তবলা বাজিয়ে। অনেক আসরে বৃদ্ধ রত্নেশ্বরের বড় আদর। নিস্তারিণী শ্যামবর্ণ, একহারা, বড় সুন্দর ওর চোখ দুটি, গলার সুর মিষ্টি। সে গাইলে বড় সু-স্বরে-
নীলবরণী নবীন বরুণী নাগিনী-জড়িত জটা-বিভূষিণী
নীলনয়নী জিনি ত্রিনয়নী কিবা শোভে নিশানাথ নিভাননী।
গান শেষ হলে তিলু পেছন থেকে গিয়ে ওর মুখে একখানা আস্ত চিনির মঠ গুঁজে দিলো। বৌটির লাজুক চোখের দৃষ্টি নেমে পড়লো, বোধ হয় একটু
১৭৫