—না, আজ বিলু থাকবে।
—খোকা?
—আমার কাছে থাকবে।
ভবানীর মন খারাপ হয়ে গেল। তিলুর পালার দিন খোকা এ ঘরেই থাকে, আজ তাকে দেখতে পাবেন না—ঘুমের ঘোরে সে তাঁর দিকে সরে এসে হাত কি পা দু’খানা ওঁর গায়ে তুলে দিয়ে ছোট্ট সুন্দর মুখখানি উঁচু ক’রে ঈষৎ হাঁ করে ঘুমোয়। কি চমৎকার যে দেখায়!
আবার ভাবেন, কি অদ্ভুত শিল্প! ভগবানের অদ্ভুত শিল্প!
বিলু পান খেয়ে ঠোঁট রাঙা করে এসে বিছানার একপাশে বসলো। হাতে পানের ডিবে।
ভবানী বললেন—এসো বিলুমণি, এসো—
বিলুর মুখ যেন ঈষৎ বিষন্ন। বললে—আমারে তো আপনি চান না!
—চাই নে?
—চান না, সে আমি জানি। আপনি এখুনি দিদির কথা ভাবছিলেন।
—ভুল। খোকনের কথা ভাবছিলাম।
—খোকনকে নিয়ে আসবো?
—না। তোমার কাছে সে রাতে থাকতে পারবে?
—দাঁড়ান, নিয়ে আসি। খুব থাকতি পারবে।
একটু পরে ঘুমন্ত খোকাকে কোলে নিয়ে বিলু ঘরে ঢুকলো। হেসে বললো—দিদি ঘুমিয়ে পড়েছিল, তার পাশ থেকে খোকাকে চুরি করে এনেচি—
—সত্যি?
—চলুন দেখবেন। অঘোরে ঘুমুচ্চে দিদি।
—ঘর বন্ধ করে নি?
—ভেজিয়ে রেখে দিয়েচে—নিলু যাবে বলে। নিলু এখনো রান্নাঘরের কাজ সারচে। নিলু তো দিদির কাছেই আজ শোবে—দিদি ওবেলা বড়ির ডাল বেটে বড় নেতিয়ে পড়েছে। সোজা খাটুনিটা খাটে—