বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 -না। সেটা শাশুড়ীর কাছে আছে।

 -আয় আমার সঙ্গে। বিছুটির লতার মধ্যি এখানে বসে আছে দুজনে! তার মতো এমন নির্বোধ মেয়ে আমি যদি দুটি দেখেচি-কুন্তীঠাকরুন যদি একবার টের পায়, তবে গাঁয়ে তোমারে তিষ্ঠুতে দেবে?

 -না দেয়, ইছামতীর জল তো আর কেউ কেড়ে নেয় নি।

 -আবার সব বাজে কথা বলে! মেরে হাড় ভেঙে বলে দিচ্চি-মুখের ওপর আবার কথা? চল-ডুব দিয়ে নে নদীতে একটা। চল, আমি কাপড় দেবো এখন।

 তিলু ওকে বাড়ি নিয়ে এসে ভিজে কাপড় ছাড়িয়ে শুকনো কাপড় পরালে। কিছু খাবার খেতে দিলে। ওকে কথঞ্চিৎ সুস্থ ক’রে বললে-কতদিন থেকে ওর সঙ্গে দেখা করচিস?

 -পাঁচ-ছ’মাস।

 -কেউ টের পায় নি?

 -নুকিয়ে ওই বনের মধ্যি ও-ও আসে, আমিও আসি।

 -বেশ কর! বালতি একটু মুখি বাধচে না ধিঙ্গি মেয়ের? আর দেখা করবি নে, বল্?

 -আর দেখা না করলি ও থাকতি পারবে না।

 -ফেবৃ! তুই আর যাবি নে, বুঝলি?

 ーহুঁ

 -কি হুঁ? যাবি, না যাবি নে?

 নিস্তারিণী অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে ঘাড় দুলিয়ে বললে-গোবিন্দ আমাকে একটা জিনিস দিয়েচে-

 —কি জিনিস?

 -নিয়ে এসে দেখাবো? কানে পরে, তাকে মাকড়ি বলে-

 ーকোথায় আছে?

 নিস্তারিণী ভয়ে ভয়ে বললে-আমার কাছেই আছে-আচলে বাঁধা আছে

২৫৫