পড়ে আছে, আনবার কোনো বন্দোবস্ত ক’রে উঠতি পাচ্চিনে-
—ও সব আমি শুনচিনে। আমার ইচ্ছে, গাঁয়ের সব বেরাহ্মণদের এবার লুচি চিনির ফলার খাওয়াবো। তুমি বন্দোবস্ত করে দাও। আর আমার সোনার যশম চাই।
—বাবা, এবার যে মোটা খরচের ফর্দ!
—তা হোক। খোকাদের কল্যোণে এ তোমাকে কত্তি হবে। আর ছোট খোকার বোর, পাটা, নিমফল তোমাকে ওই সঙ্গে দিতি হবে।
—দাঁড়াও বাড়বৌ, একসঙ্গে আমন গড়গড় ক’রে বলো না। রয়ে বসে-
—না, রতি বসতি হবে না। ময়না ঠাকুরঝিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আনাতি হবে-আমি আজই সায়ের মাকে পাঠিয়ে দিই।
—আরে, তারে তো কালীপূজোর সময় আনতিই হবে-সে তুমি পাঠিয়ে দাও না যখন ইচ্ছে। আবার দাঁড়াও, ব্রাহ্মণ ঠাকুরের কোথায় ফলার খাবেন তার ঠিক করি। চন্দর চাটুয্যে তো মারা গিয়েচেন-
—আমি বলি শোনো, ভবানী বাঁডুয্যের বাড়ি যদি করতি পারো! আমার দুটো সাধের মধ্যি এ হোলো একটা।
—আর একটা কি শুনতি পাই?
—খুব শুনতি পারো। রামকানাই কবিরাজকে তন্ত্রধার করে পূজো করতি হবে। অমন লোক এ দিগরে নেই।
—বোঝলাম-কিন্তু সে বড্ড শক্ত বড়বৌ। পয়সা দিয়ে তেনারে আনা যাবে না, সে চীজ না; ও ভবানী ঠাকুরেরও সেই গতিক। তবে তিলু দিদিমণি আছেন সেখানে সেই ভরসা। তুমি গিয়ে তেনারে ধরে রাজী করাও। ওঁদের বাড়ি হলি সব বেরাহ্মণ খেতি যাবেন।
স্বামী-স্ত্রীর এই পরামর্শের ফলে কালীপূজার রাত্রে এ গ্রামের সব ব্রাহ্মণ ভবানী বাঁড়ুয্যের বাড়িতে নিমন্ত্রিত হোলো। তিলুর খোকা যাকে দ্যাথে তাকেই বলে-কেমন আছেন?
কাউকে বলে-আসুন, আসুন। তুমি ভালো আছেন?
২৭৮