তিলু ও নিলুর সাতখুন মাপ এ গাঁয়ে। তিলু কোনো কিছু মেনে চলার মত মেয়েও নয়, সবাই জানে। কিন্তু মজাও এই, তার বা তাদের ক’বোনের নামে কখনো এ গাঁয়ে কিছু রটে নি। কেন তার কারণ বলা শক্ত। তিলু মমতাভরা চোখের দৃষ্টি নিস্তারিণীর দিকে তুলে বললে—আয় ভাই আয়। এত অবেলা?
নিস্তারিণী ঘাটভরা বৌ-ঝিদের দিকে একবার তাচ্ছিল্যভরা চোখে চেয়ে দেখে নিয়ে অনেকটা যেন আপন মনে বললে, তেঁতুল কুটতে কুটতে বেলাডা টের পাই নি!
—ওমা, আমরাও আজ তেঁতুল কুটছিলাম রে। নিলু আর আমি। আমাদের ওপর রাগ হয়েচে নাকি?
—সেডা কি কথা? কেন?
—আমাদের বাড়িতে যাস্ নি ক’দিন।
—কখন যাই বলো ঠাকুরঝি। ক্ষার সেদ্ধ করলাম, ক্ষার কাচলাম। চিঁড়ে কোটা, ধান ভানা সবই তো একা হাতে করচি। শাশুড়ী আজকাল আর লগি দ্যান না বড় একটা—
নিস্তারিণী সুরূপা বৌ, যদিও তার বয়েস হয়েচে এদের অনেকের চেয়ে বেশি। তার হাত পা নেড়ে ঠোঁটের হাসি ঠোঁটে চেপে কথাটা বলবার ভঙ্গিতে হিমি আর বিরাজ একসঙ্গে কৌতুকে হি হি ক’রে হেসে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে যেন কোথাকার একটা বাঁধ খুলে গেল, হাসির ঢেউয়ের রোল উঠলো চারিদিক থেকে।
হিমি বললে—নিস্তারদি কি হাসাতেই পারে। এসো না, জলে নামো না নিস্তারদি।
বিরাজ বললে—সেই গানটা গান না দিদি। নিধুবাবুর—কি চমৎকার গাইতে পারেন ওটা! বিধুদিদি যেটা গাইতো।
সবাই জানে নিস্তারিণী সুস্বরে গান গায়। হাসি গানে গল্পে মজলিস জমাতে ওর জুড়ি বৌ নেই গাঁয়ে। সেই জন্যেই মুখ ফিরিয়ে অনেকে বলে—অতটা