—তার চেয়ে বড় কাজ—ভক্তি শিক্ষা দিও।
—তুমি বৈদান্তিক সন্ন্যাসী। ভূতের মুখে রাম নাম?
—বৈদান্তিক হওয়া সহজ নয় জেনো। বেদান্তকে ভালো ভাবে বুঝতে হোলে আগে ন্যায়-মীমাংসা ভালো ক'রে পড়া দরকার। নইলে বেদান্তের প্রতিপাদ্য বিষয় ঠিকমত বোঝা যায় না। ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করা বড় কষ্টসাধ্য।
—আমাকে পড়াও না দিনকতক?
—দিনকতকের কর্ম নয়। ন্যায় পড়তেই অনেকদিন কেটে যাবে। তুমি ন্যায় পড়, আমি এসে বেদান্ত শিক্ষা দেবে। তবে সাধনা চাই। শুধু পড়লে হবে না। সংসারে জড়িয়ে পড়েচ, ভজন করবে কি ক'রে? এজন্মে হোল না।
—কুছ, পরোয়া নেই। এই জন্যেই ভক্তির পথ ধরেছি।
—সেও সহজ কি খুব? জ্ঞানের চেয়েও কঠিন। জ্ঞান স্বাধ্যায় দ্বারা লাভ হয়, ভক্তি তা নয়। মনে ভাব আসা চাই, ভক্তির অধিকারী হওয়া সবচেয়ে কঠিন। কোনটাই সহজ নয় রে দাদা।
—তবে হাত-পা গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকবো?
—তেষাং সতত যুক্তানাং ভজং প্রীতিপূর্বক—গীতায় বলেছেন শ্রীকৃষ্ণ। তাঁতে চিত্ত নিযুক্ত রাখলে তিনিই তাঁকে পাবার বুদ্ধি দান করেন—দদামি বুদ্ধিযোগং তং-
—তুমিই তো আমার উত্তর দিলে।
—বিয়েটা করে একটু গোলমাল করে ফেলেছো। জড়িয়ে পড়বে। একেবারে তিনটি—একেই রক্ষা থাকে না।
—পরীক্ষা করে দেখি না একটা জীবন। তাঁর কৃপায় দৌড়টাও তো বোঝা যাবে। ভাগবতে শুকদেব বলেচেন-গৃহৈর্দারাসুতৈষণাং-গৃহস্থের মত ভোগ দ্বারা পুত্র-স্ত্রী নিয়ে ঘর করবার বাসনা দূর করবে। তাই করচি।
—তা হোলে এতকাল পরিব্রাজক হয়ে তীর্গে বেড়ালে কেন, যদি গৃহ সাজবার বাসনাই মনে ছিল তোমার?
—ভেবেছিলাম বাসনা ক্ষয় হয়েছে। পরে দেখলাম রয়েছে। তবে ক্ষয়ই