পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপদেশ । ويا وما আসিয়া চলিয়া গেল। মহাকীক্তিশালী ভগবান, তিনি এক বৎসরে দশ বৎসরের কার্য্য করেন । দশ বৎসরের ভিতরে এত লীলা, এত মহাকীৰ্ত্তি সংস্থাপন করেন যে, নদীর তরঙ্গ যেমন গণনাতীত, র্তাহার লীলা সকলও তেমনই গণনাতীত। হে বন্ধুগণ, সেই সকল লীলার কাহিনী অামি বা অপর কেহ যে বর্ণনা করিতে পারিবে, ইহা সম্ভব নয় ; তত্ৰাপি যখন মনঃ-পটে এই মহাচিত্র দর্শন করি, যখন হৃদয়-রঙ্গভূমিতে বিধাতার বিবিধ অভিনয়ের নানা দৃশু স্মরণ করি, তখনই তাহ লোকের নিকট বলিতে ইচ্ছা করে। যেন কত কি বলিবার আছে, মনে হয়। যখন ইংরাজী ১৮৬৬ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ সংস্থাপিত হইল, এবং তাহার স্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে এই মহাশ্লোক রচিত ও উচ্চারিত হইল, “সুবিশালমিদং বিশ্বং পবিত্রং ব্রহ্মমন্দিরম্”, তখনই সঙ্গে সঙ্গে এই মহাভাগবত স্বল্প হইল । অবগত আছ, ভক্তি বিনা ভাগবত কি ? ভাগবত ভক্তি-শাস্ত্র বিনা আর কিছুই নয়। ভগবৎ লীলাতেই ভাগবত হয়। যুগধৰ্ম্ম-ভাগবতের প্রথম অধ্যায় ভক্তির কালিতে, ভক্তির কলমে, ভক্তির ছন্দোবন্দে রচিত। যখন পুরাতন ব্রাহ্মসমাজ মাতা আদি ব্রাহ্মসমাজের বক্ষ হইতে অবস্থার তাড়নায় ছিন্ন হইল, তখন আমাদের হৃদয়ে রস কোথায় ? সেই সময়ে বিশুষ্ক নীতির ভিতরে অমৃতের আস্বাদ কে করিত ? নীরস জ্ঞানের ভিতর মধুরতা কে পাইত ? তখনকার উপাসনা চীৎকার ছিল, প্রার্থনা মনোবেদনা-ব্যঞ্জক ছিল ; ক্ৰন্দনের মিষ্টতা ছিল না, কেবল সন্তাপ ছিল। একে ত পিতৃতুল্য ব্রাহ্মদিগের সহায়তা হইতে বঞ্চিত হওয়া হইল, তাহার উপরে আবার যাদৃশ ভাব থাকা উচিত ছিল, তাহ নয়নগোচর হইত না। যখন মঙ্গলময়ের ধান-গুণচিন্তনে নিযুক্ত হওয়া হইত, চক্ষে জ্যোতি পড়িত না, কেবল অন্ধকারের ছায়াই পড়িত।