আজ সঞ্জয়ের মুখে এই সংবাদ শুনিবামাত্রই, মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র অজ্ঞান হইয়া পড়িলেন। ভীষ্ম, দ্রোণের মৃত্যু সংবাদেও তিনি এত ক্লেশ পান নাই।
শল্যপর্ব
র্ণের মৃত্যুতেও দুর্যোধন পাণ্ডবদিগের সহিত সন্ধি করিতে চাহিলেন না। তাঁহার পক্ষের বীরগণেরও বিলক্ষণ রণোৎসাহ দেখা গেল। সুতরাং প্রস্তুত হইলেন।
সে রাত্রে আর তাঁহারা শিবিরে থাকেন নাই। তীরে, হিমালয়প্রস্থ নামক স্থানে, তাঁহারা রাত্রি কাটাইয়াছিলেন।
পরদিন নতুন সেনাপতি শল্য অসাধারণ বিক্রমের সহিত যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন। আজ এই নিয়ম হইল যে ‘তাহাদের কেহই একাকী পাণ্ডবদিগকে আক্রমণ করিতে যাইবেন না;সকলে মিলিয়া সাবধানে পরস্পরকে সাহায্য করা হইবে৷’ মোটামুটি এইভাবেই যুদ্ধ চলিল। কিছুকাল যুদ্ধের পরই, কর্ণের পুত্র চিত্রসেন, সত্যসেন এবং সুষেণ নকুলের হাতে এবং শল্যের পুত্র সহদেবের হাতে মারা গেলেন।
তারপর ভীমের সহিত শল্যের ঘোর গদাযুদ্ধ হয়। যুদ্ধ করিতে করিতে, শেষে দুইজনেই দুজনের গদাঘাতে অজ্ঞান হওয়ায়, কৃপাচার্য শল্যকে লইয়া প্রস্থান করিলেন, আর ভীম উঠিয়া গদা হাতে তাঁহাকে ডাকিতে লাগিলেন।
যুধিষ্ঠিরের সহিত শল্যের বারবার যুদ্ধ হয়! তখন পাণ্ডবপক্ষের যোদ্ধারা সকলে মিলিয়াও শল্যের কিছুই করিতে পারেন নাই! অর্জুন এ সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না; তিনি অন্যস্থানে অশ্বথামা প্রভৃতির সহিত যুদ্ধ করিতেছিলেন। কিন্তু ইহার কিছুকাল পরে, অর্জুনের সম্মুখেই সৈন্যেরা ভীমের নিষেধ অমান্য করিয়া, পলায়ন করিতে লাগিল।
এই সময়ে শল্যের বাণে নিজে নিতান্ত অস্থির হইয়া এবং সৈন্যদিগকে রক্তাক্ত শরীরে পলায়ন করিতে দেখিয়া, যুধিষ্ঠির প্রতিজ্ঞা করিলেন “হয় শল্যকে বধ করিব না হয় নিজে প্রাণ দিব৷” তারপর ভীমকে সম্মুখে অর্জুনকে পশ্চাতে এবং ধৃষ্টদ্যুম্ন আর সাত্যকিকে দুপাশে লইয়া, তিনি শল্যের সহিত এমন ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন যে তাহতে কৌরবদের আর আতঙ্কের সীমা রহিল না।
ইহার মধ্যে একবার শল্যের বাণে কঠিন বেদনা পাইয়াও যুধিষ্ঠির তাঁহাকে অজ্ঞান করিয়া দিলেন। কিন্তু শল্যের জ্ঞান হইতে অধিক সময় লাগিল না। তখন যুধিষ্ঠির তাঁহার কবচ ভেদ