কম্লা নাপিত
ঘোড়া চেপে কম্লা নাপিত যাচ্ছে তাড়াতাড়ি,
রাত না হতেই কোনমতে ফিরতে হবে বাড়ি।
বন-জঙ্গল পেরিয়ে যেতেই সন্ধ্যা হল অতীত,
বনের পাশের গাঁয়ে গিয়ে রাত্রে হল অতিথ।
রাত পোহাবার আগে ঘরে না ফিরলেই নয়,
যেতেই হবে শেষ রাত্রে, ভাবল কিসের ভয়?
বাঘ একটা এমন সময় ঘোড়ার গন্ধ পেয়ে,
বন থেকে এল চলে আস্তাবলে ধেয়ে।
কম্লা নাপিত উঠে তখন লাগাম চাবুক নিয়ে,
ঘোড়ায় চড়বে বলে হাজির আস্তাবলে গিয়ে।
বাড়ির লোক বলে, “কমল, রাত্রে কোথা যাবে?
পথে আছে বন-জঙ্গল, বাঘে ধরে খাবে।”
হেসে বললে কম্লা নাপিত, “আমি বাঘের চাঁই,
বাঘের ঘাড়ে চড়ি আর সিংহ ধরে খাই।”
চাঁইয়ের কথা শুনে বাঘ বিপদ গণে মনে,
ভয়ে হয়ে জড়সড় দাঁড়াল এক কোণে।
“আয়, ঘোড়া, আয়” বলে কথা কয় মিঠে।
আঁধার ঘরে দিল হাত বুড়া বাঘের পিঠে।
থরহরি কাঁপে বাঘ, লাগাম নিল মুখে,
কম্লা নাপিত বসল তার পিঠে চেপে সুখে।
বাঘ দেখলে কম্লা নাপিত! নয়কো বাঘের চাঁই।
কম্লা নাপিত দেখলে বাঘ! ভাবে কোথা যাই।
ধরে একটা আমের ডাল, লাফিয়ে উঠল গাছে,
রেগেমেগে বাঘ তখন গেল বনের মাঝে।
যেতে যেতে বললে বাঘ, “তুই একটা ঠক ত!
আচ্ছা থাক। বাগে পেলেই খাব তোর রক্ত।”
(২)
একদিন কিনা কম্লা নাপিত লাঙ্গল নিয়ে কাঁধে
ক্ষেতে গেছল চাষ করতে। আব কে লাঙ্গল ফাঁদে।
বাঘ এসে বললে তখন, “তুই না বেটা চাঁই?
কোথা যাবি কম্লা নাপিত, তোরে ধরে খাই!”