পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
দারোগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

তখন কেনারাম দাদাকে কোদালের আবশ্যকতা বুঝাইবার জন্য কহিলাম, “দেখ, কেনারাম-দা, পিছনের মাঠে যে দুই রকমের পায়ের দাগ দেখিয়া আসিয়াছি, সেই পায়ের দাগ রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে মাটী শুদ্ধ কাটিয়া লওয়াই আমার ইচ্ছা। সেই জন্যই কোদাল চাহিয়াছি, কারণ, এর পর সে পায়ের দাগ নষ্ট হইয়া যাইবে।

 তখন আমার কথা কেনারায় দাদা বুঝিতে পারিয়া আমার বুদ্ধির অনেক প্রশংসা করিলেন। আমি তখন আরো একটু উৎসাহিত হইয়া কহিলাম,—“আচ্ছা, কেনারাম-দা, আমার মনে হয়, যেমন সকল খুনের মধ্যে কোন না কোন রকমে মেয়ে মানুষের সংস্রব থাকে, এ খুনের মধ্যেও তাই আছে। তবে বেশীর ভাগ আসামীকে এখানে ছদ্মবেশী পুরুষ বলিয়া আমার মনে হয়।”

 কেনা। খুনের মধ্যে মেয়েমানুষের সংস্রব থাকিতে পারে, কিন্তু খুনের মধ্যে আসামী যে একজন ছদ্মবেশী লোক একথা কিরূপে বুঝলে?

 আমি। আসামী সাধারণ লোক হইলে—সে অনায়াসে আমাদের এ বাড়ীতে প্রবেশের পূর্ব্বেই লম্বা দিতে পারিত। এক জন শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত লোক না হইলে একজন স্ত্রীলোকের মানসম্ভ্রম রক্ষার জন্য আপনার জীবনকে বিপদাপন্ন করিবে কেন? আর সে স্ত্রীলোককেও সম্ভ্রান্তবংশীয়া বলিয়া আমার মনে হয়।

কেনা। তোমার মাথাটা খারাপ হইয়া গিয়াছে ভাই—তাই এই সকল প্রলাপ বকিতেছ। তোমার কল্পনাশক্তির আমি প্রশংসা করিতে পারি কিন্তু আর অন্যের কাছে এ সকল কথা মুখে আনিও না।