উভয় সঙ্কট।
৫১
করিয়া অনুসন্ধান করিলাম কিন্তু আসামীর কোন সন্ধানই পাইলাম না। তখন অগত্যা বিষণ্ণমনে আমরা থানায় ফিরিলাম। অপরাপর সকলকে থানায় অপেক্ষা করিতে বলিয়া আমি একবারে বড় সাহেবের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলাম। তিনিও আমারই অপেক্ষা করিতেছিলেন, আমায় দেখিয়াই কহিলেন,—“সংবাদ কি?”
“আমি একে একে সমস্ত ঘটনা তাঁহার নিকট বর্ণনা করিলাম। আমার কথা শেষ হইলে তিনি কিছুক্ষণ কি চিন্তা করিয়া কহিলেন, “আসামীর সহিত নবাব সাহেবের কোন সাদৃশ্য দেখিতে পাইয়াছিলে কি?”
আমি একটু ভাবিয়াই কহিলাম, “আকৃতি ও গঠন প্রায় একরূপ, কিন্তু আসামীর যেরূপ দাড়ী ছিল, নবাব সাহেবের সেরূপ দাড়ী দেখিলাম না, আর আসামীর রং কাল কিন্তু নবাব সাহেবের রং গৌরবর্ণ দেখিলাম।”
বড়সাহেব কহিলেন, “দাড়ী কামান যায়, রংও বদলাইতে পারা যায়। আসামী যে ছদ্মবেশী বড়লোক সে কথা কি ভুলিয়া গিয়াছ? আমার অনুমানই তবে ঠিক্, এ আসামী অন্য কেহ নহে, সেই রামপুরেরই নবাব স্বয়ং!”
হঠাৎ আমারও চমক ভাঙ্গিয়া গেল, আমি অগাগোড়া ভাবিয়া দেখিলাম, বড়সাহেবের অনুমানই ঠিক, তখন আমরা এক ভয়ঙ্কর উভয় সঙ্কটে পড়িলাম। আমার মুখ হইতে এই সময় বাহির হইল—“তবে নবাব সাহেবকেই গ্রেপ্তার করা যাউক।”
বড় সাহেব কহিলেন,—“এখন সে কাজ করিলে কোন ফল হইবে না। তবে এই নবাব সাহেব আর তাহার সেই সঙ্গী—