পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ঋষিকবি রবীন্দ্রনাথের জন্মদিবস আজ জাতীয় উৎসবের পর্যায়ে উন্নীত হইয়াছে। লক্ষ্য করিলে দেখা যাইবে যে, রবীন্দ্রনাথের বিশেষ একটি পরিচয়ই প্রাধান্য লইয়া উত্তরোত্তর পুরোভাগে আগমন করিতেছে, সে-পরিচয়টি হইল— রবীন্দ্রনাথ এ-যুগে উপনিষদের ঋষি। ঋষি শব্দটি বিশেষ অর্থ বহন করিয়া থাকে। ঋষি অর্থে সত্যদ্রষ্টাকে বুঝাইয়া থাকে। যিনি ব্রহ্মকে জানিয়াছেন, তিনিই ঋষি। রবীন্দ্রনাথকে এই অর্থেই ঋষি বলা হইয়া থাকে।

 অনেকেই প্রশ্ন করিয়া থাকেন, রবীন্দ্রনাথ কি ব্রহ্মজ্ঞ? প্রশ্নটি জিজ্ঞাসার মধ্যে কোন অবিশ্বাস, সন্দেহ, প্রতিবাদ ইত্যাদি সূচিত হয় না। রবীন্দ্রনাথের লেখা পড়িয়া, গান শুনিয়া সকলের মনেই এই ধারণা হইয়া থাকে যে, তিনি সত্যদ্রষ্টা ঋষি এবং তাঁহাকে ব্রহ্মজ্ঞ বলিয়াই সকলে বিশ্বাস করিয়া থাকেন। কিন্তু বিশ্বাস তো প্রমাণ নহে, তাই তাঁহাদের এই বিশ্বাসের সমর্থনে কোন প্রমাণ আছে কি না, ইহা জানিবার জন্যই উক্ত প্রশ্নটি জিজ্ঞাসিত হইয়া থাকে।

 রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ প্রভৃতি সম্পর্কে বহু পুস্তক রচিত হইয়াছে। রবীন্দ্রদর্শন সম্বন্ধে বিশ্ববিখ্যাত মনীষী ডাঃ রাধাকৃষ্ণণ এবং ডাঃ সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তও পুস্তক রচনা করিয়াছেন। উভয়েই তাঁহাকে ঋষি বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন। কিন্তু তাঁহাদের এই স্বীকৃতি রবীন্দ্রনাথের মতবাদ, রবীন্দ্রনাথের রচনা ইত্যাদির ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত। রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ, ইহা প্রমাণের চেষ্টা উভয়ের কেহই করেন নাই, ঋষিরূপে তাঁহাকে স্বীকার করিয়া লইয়া তাঁহারা