পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
ঋষি রবীন্দ্রনাথ

 পূর্বেই বলা হইয়াছে যে, রবীন্দ্রনাথের এই তৃতীয়-দর্শনটি, যেখানে তিনি বলিয়াছেন, ‘ক্ষণে ক্ষণে দেখিয়াছি দেহের ভেদিয়া যবনিকা অনির্বাণ দীপ্তিময়ী শিখা’,—ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণে অপেক্ষাকৃত একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার বলিয়া প্রতিভাত হইবে। এতক্ষণ যাহা কিছু বলা হইয়াছে, তাহাতে এইটুকুই মাত্র প্রমাণিত হইয়াছে যে, এই শরীরের মধ্যে একটি জ্যোতির্ময় শিখা বা জ্যোতি রহিয়াছে এবং সেই জ্যোতিকেই যোগশাস্ত্রসমূহ ব্রহ্ম বা আত্মজ্যোতি বলিয়াছেন।

 কিন্তু রবীন্দ্রনাথের দৃষ্ট ‘দীপ্তিময়ী শিখাই’ যে সেই ব্রহ্মজ্যোতি, তাহা ঠিক সাক্ষাৎভাবে আমরা এখন পর্যন্ত প্রমাণ করিতে পারি নাই। রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধির ব্যাখ্যায় বা বিশ্লেষণে আমরা এতাবৎ প্রায় একান্তভাবে উপনিষদেরই আশ্রয় ও সাহায্য লইয়াছি। এক্ষেত্রেও উপনিষদের সাহায্য যথাস্থানে গৃহীত হইবে। তাহার পূর্বে অপরাপর অধ্যাত্মশাস্ত্রের সাহায্যে রবীন্দ্রনাথের কথিত এই ‘দীপ্তিময়ী শিখা’ সম্বন্ধে স্পষ্ট কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় কি না, তাহারই কিছু প্রচেষ্টা করা গিয়াছে এবং আরও একটু করা যাইতেছে।