পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৮ | ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। ওয়ালেসের বন্ধুবর্গের কেহ কেহ আসিয়া সদলে তাহাদিগের সহিত মিলিত হইলেন। সেখানে এক রজনী অতিবাহিত করিয়া পেটি য়ট - দল বার্ণেম্ অরণ্যাভিমুখে যাত্রা করিলেন। তথায় আসিয়া তাহার | প্রাণদণ্ডাজ্ঞা প্রাপ্ত স্কোয়ার রুথ ভেনের সহিত মিলিত হইলেন। এই মিলিত সেনা তথা হইতে আথোল, এবং আথােল হইতে শােরণে গমন করিল। পথিমধ্যে তাহাদিগের কষ্টের আর সীমা রহিল না। পথের দুইধারের অধিবাসিবৃন্দ দুর্ভিক্ষ-রাহুগ্রস্ত হইয়া কঙ্কালসার হইয়া পড়িয়াছিল। নিরন্তর রণে কৃষি ব্যবসায়াদি সমস্ত বন্ধ। কোনখানে খাদ্যসামগ্রীর সংগ্রহ নাই। ক্ষেত্র সকল শস্যশূন্য ; 'দোকানপসার, হাট বাজার সমস্ত বদ্ধ। দেশের এই শােচনীয় অবস্থা দেখিয়া ওয়ালেসের হৃদয় ফাটিয়া যাইতে লাগিল। বিশেষতঃ তাহার আর ধৈৰ্য্য রহিল না। অনশনে তাহাদিগকে মৃতপ্রায় দেখিয়া তিনি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন ;-ভ্রাতৃবৃন্দ। আমিই তােমাদিগের এই দুঃখের কারণ। অনুমতি কর আমি একবার আসি যদি তােমাদিগের কষ্ট নিবারণ করিতে পারি ভালই, নতুবা তােমাদিগকে আর একপে আবদ্ধ রাখিব না’-বলিয়া তাহার প্রত্যাগমন পর্যন্ত তাহাদিগকে তথায় অবস্থিতি করিতে অনুরােধ করিয়া তিনি অন্তর্ধান করিলেন। ওয়ালেস পর্বতের অধিত্যকা প্রদেশ উলম্বন করিয়া একটী ক্ষেত্রে আসিয়া অবতীর্ণ হইলেন। তাহার হৃদয়ের যাতনার সীমা ছিল না। তিনি ক্লান্ত হইয়া এক তরুমূলে বসিয়া করতলে কপােল 'বিন্যস্ত করিয়া কত কি ভাবিতে লাগিলেন-মনে মনে আপনাকে তিরস্কার করিয়া বলিতে লাগিলেন—‘পামর ! তােমারই দোষে তােমার আনুযাত্ৰিকবর্গের আজ এত কষ্ট! স্কটলগুকে স্বাধীন করিবার চেষ্টায় তুমি এরূপ উৎসগীকৃত প্রাণ বীরবৃন্দকে আহুতি : দিতে উদ্যত হইয়াছ! কিন্তু বৃথা আশ!, বিধাতা তােমার অদৃষ্টে এ সৌভাগ্য লেখেন নাই বােধ হয় তােমা অপেক্ষা কোন যােগ্যতর ও অধিকতর সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির ললাটে এ সৌভাগ্য লিখিত হইয়াছে।